শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৫৫ অপরাহ্ন

সারাদেশে কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ততা……..!

সারাদেশে কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ততা……..!

স্বদেশ ডেস্ক: পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। লাভের আশায় নাওয়া-খাওয়া ভুলে তারা পশু পরিচর্যা করছেন। বুকভরা আশা নিয়ে তারা দিন গুনছেন কখন জমে উঠবে পশুর হাট। গত বছর শেষের দিকে দাম পড়ে যাওয়ায় অনেক খামারি লোকসানের মুখে পড়েন। এ বছর লাভের আশা করছেন তারা। নিরাপদ গো-মাংস নিশ্চিত করার জন্য খামারগুলোতে কোনো ধরনের নিষিদ্ধ ট্যাবলেট ও ইনজেকশন ছাড়াই ঘাস, খড়, খৈল, কুঁড়া, ভুসি, ভাতের মাড় ও খুঁদের (ভাঙা চাল) ভাত খাইয়ে গরু, ছাগল ও ভেড়া হƒষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খামারিরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নজরদারি করা হচ্ছে। তারপরও গরু মোটাতাজাকরণে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ওষুধ এবং স্টেরয়েডও ব্যবহার করছেন একশ্রেণির বেপারিরা।

ভৈরব: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গবাদি পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। বুকভরা আশা নিয়ে তারা দিন গুনছে কখন জমে উঠবে পশুর হাট। পৌর শহরের চন্ডিবের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা বিলকিছ বেগম। আজ থেকে ৬ বছর আগে মাত্র একটি গাভী দিয়ে শুরু করে গবাদি পশু লালন-পালন। বর্তমানে বিলকিছ বেগমের গোয়ালে ১২টির বেশি পশু রয়েছে। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তিনি এখন প্রান্তিক পর্যায়ে একজন সফল খামারি। বিলকিছ সবুজ ঘাস, খড়, কুঁড়া, কৈল ও ভুসির মাধ্যমে পশু মোটাতাজা করছেন।

কালিয়াকৈর: গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে গরুর খামার। প্রতিটি বাড়িতে চলছে গরু লালন-পালন। গরু মোটাতাজাকরণে দেশীয় পদ্ধতি বেছে নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সীমান্তপথে গরু আসা বন্ধ হলে গরু মোটাতাজা করে লাভবান হতে পারবেন খামারিরা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈরে প্রায় দেড় হাজার গরুর খামার রয়েছে। এখানে ১০ হাজার গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। গরুর পাশাপাশি এখানে কিছু ভেড়া, ছাগল ও মহিষ লালন-পালন করা হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও: জেলার পাঁচ উপজেলায় প্রায় এক হাজার নিবন্ধিত পশুর খামার রয়েছে। এসব খামারে ৭৫ হাজার পশু প্রস্তুত করেছে খামার মালিক ও গৃহস্থরা। কোরবানির বাজারে স্বাস্থ্যসম্মত দেশি গরুর বেশি চাহিদা থাকায় খামারিরা প্রাকৃতিক উপায়ে প্রস্তুত করেছেন এসব গরু। ভারত থেকে গরু না এলে ভালো দাম পাবেন বলে আশা করছেন খামারিরা। এরই মধ্যে গরু ব্যবসায়ী ও বেপারিরা খামারে খামারে গিয়ে চাহিদামতো গরু দরদাম করে কিনতে শুরু করেছেন।

দিনাজপুর: জেলার ১৩ উপজেলায় প্রায় আড়াই হাজার খামারে প্রস্তুত করা হচ্ছে ২ লাখের মতো গবাদি পশু। প্রাণিসম্পদ বিভাগ খামারগুলোতে হƒষ্টপুষ্টকরণ কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটরিং করছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আসন্ন কোরবানি উপলক্ষে এ বছর আড়াই হাজার খামারে পশু হƒষ্টপুষ্টকরণের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ৬১ হাজার খামারি। এর মধ্যে ১২০৯টি খামার প্রাণিসম্পদ বিভাগের রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত। বাকি ১৩৫০টি খামার রেজিস্টেশনবিহীন।

চাঁদপুর: জেলায় এ বছর ২ হাজার ৩৫৮ খামারি প্রায় ৩৭ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করে রেখেছে। নিরাপদ গো-মাংস উৎপাদনের লক্ষ্যে খামারিরা গবাদি পশু মোটাতাজা করে আসছে। জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার আট উপজেলায় ষাঁড়, বলদ, ছাগল ও ভেড়াসহ প্রায় ৩৭ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

চট্টগ্রাম: নগরীর বিভিন্ন স্থান ছাড়াও চট্টগ্রামের ১৬ উপজেলায় গরু মোটাতাজাকরণে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ওষুধ ও স্টেরয়েড ব্যবহার করছেন একশ্রেণির বেপারি। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে কোরবানিদাতারা। এদিকে কোরবানির পশু মোটাতাজাকরণের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছে বিভিন্ন সংগঠন। এ ব্যাপারে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম। এছাড়া ৭ আগস্ট থেকে চট্টগ্রামের গরুর বাজারে ক্যাব ও জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের যৌথ উদ্যোগে সুস্থ গরু কিনতে প্রচারণা অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাজারগুলোতে জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সার্বক্ষণিক চিকিৎসক টিমসহ ভ্রাম্যমাণ তদারকি দল অবস্থান করবে; তারা গরু ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের সব সেবা ও পরামর্শ দেবেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877