রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৭ অপরাহ্ন

ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেন মিজান-বাছির

ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেন মিজান-বাছির

স্বদেশ ডেস্ক:

আত্মপক্ষ শুনানিতে ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করলেন পুলিশের বরখাস্ত হওয়া উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান এবং দুদকের বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। আজ সোমবার ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এ মামলায় আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

সেখানে বিচারক শেখ নাজমুল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে আসা সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে জিজ্ঞাসা করেন- তারা দোষী না নির্দোষ? জবাবে আসামি মিজানুর রহমান ও খন্দকার এনামুল বাছির উভয় ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

এরপর বিচারক জানতে চান- তারা সাফাই সাক্ষ্য দিবেন কি না? জবাবে তারা জানান, সাফাই সাক্ষী দিবেন না, তবে এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্য জমা দিবেন তারা। এরপর বিচারক লিখিত বক্তব্য দাখিলের জন্য আগামি ১২ জানুয়ারী দিন নির্ধারণ করেন।

এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করে ৩ জানুয়ারি আত্মপক্ষ শুনানি শুরু করেন। মামলার চার্জশিটভুক্ত ১৭ সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

৪০ লাখ টাকার ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। গত ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন শেখ মো. ফানাফিল্লাহ।।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়- দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ডিআইজি মিজানের জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান করছিলেন। অনুসন্ধানকালে ২০১৯ সালের ৯ জুন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় সাংবাদ প্রকাশিত হয় যে, ডিআইজি মিজান অনুসন্ধান সংশ্লিষ্টে এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ-উৎকোচ দিয়েছেন। তৎক্ষণিক দুদক একটি তদন্ত কমিটি করে প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পায়।

চার্জশিটে আরও বলা হয়, মামলার তদন্তকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সাক্ষীদের বক্তব্যগ্রহণ এবং এনটিএমসি হতে প্রাপ্ত বিশেজ্ঞ বিশ্লেষণে দেখা যায়- ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি ও ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিআইজি মিজান একটি বাজারের ব্যাগে কিছু বইসহ যথাক্রমে ২৫ লাখ টাকা ও ১৫ লাখ টাকা রমনা পার্কে এনামুল বাছিরকে দুই দফায় দেন। যার সাক্ষী আসামি মিজানের দেহরক্ষী হৃদয় হাসান ও অর্ডারলি মো. সাদ্দাম হোসেন।

এ ছাড়া মিজান ও বাছিরের মুঠোফোনের কথোপকথন পর্যালোচনায় দেখা যায়- বাছির তার ছেলেকে কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল থেকে আনা নেওয়ার জন্য মিজানের কাছে একটি গাড়িও দাবি করেন। যা তিনি দুদকের বিভাগীয় তদন্ত টিমের কাছে স্বীকারও করেছেন।

চার্জশিটে বলা হয়, আসামি মিজান ও বাছির অবৈধভাবে দুইটি পৃথক সিম ব্যবহার করে একে অপরের মধ্যে কথোপকথন-সহ ক্ষুদেবার্তা আদান-প্রদান করেছেন। সিম দুটি দেহরক্ষী হৃদয় হাসান ও অর্ডারলি সাদ্দামের নাম ক্রয় করা। হৃদয়ের নামে কেনা সিমটি মিজান বাছিরকে একটি স্যামস্যাং মোবাইলসহ প্রদান করেন এবং সাদ্দামের নামে কেনা সিমটি নিজে বাছিরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য গোপনে ব্যবহার করেন।

নম্বরগুলো থেকে মিজান বিভিন্ন সময় ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে বাছিরের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন মর্মে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। তদন্তে আরও প্রমাণিত হয় যে, মিজান অসৎ উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে বাছিরের সঙ্গে ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে সংরক্ষণ করেন এবং পরবর্তীতে তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন।

মিজান নিজে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ থেকে বাচাঁর জন্যই অসৎ উদ্দেশ্যে বাছিরকে ঘুষ প্রদান করে প্রভাবিত করেন। আর বাছির সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তার উপর অর্পিত দায়িত্বপালনকালে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ঘুষ গ্রহণ করে গোপন করেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877