স্বদেশ ডেস্ক: সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের মধ্যে জিকা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াসহ বিপজ্জনক রোগের সংক্রমণ ঘটাচ্ছে এডিস অ্যালবোপিক্টাস প্রজাতির মশা। মশা মারার প্রচলিত ওষুধ দিয়েও কমানো যাচ্ছে না এদের। এই অবস্থায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের অনেক দেশ যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন মাত্র দুই বছরে চীনের দুটি দ্বীপ থেকে এই মশা প্রায় নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছেন দেশটির বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি দ্য ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রবন্ধে এই সাফল্যের কথা উঠে এসেছে।
চীনা গবেষকরা জানিয়েছেন, দুটি পদ্ধতির সমন্বয়ে গুয়াংঝুতে এশিয়ান টাইগার নামে পরিচিত এই মশার পরিমাণ ৯৪ শতাংশ কমিয়ে আনা হয়েছে। গবেষণা দলের প্রধান ও জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের মশার বাস্তুসংস্থানবিষয়ক বিশেষজ্ঞ পিটার আর্মব্রাস্টার বলেন, তাদের গবেষণার ফলাফলে মশা ধ্বংস করতে এবং মশা-সংক্রমিত রোগ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী উপায় পাওয়া গেছে। পিটার আর্মব্রাস্টারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এডিস মশা নিধনে নতুন দুই পদ্ধতি হচ্ছে, বিকিরণের মাধ্যমে মশাকে নির্গত করা ও ওলবাখিয়া প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেনের মাধ্যমে ডিম থেকে মশার উৎপাদন রোধ করা। তিনি জানান, ল্যাবে যখন একসঙ্গে এই দুটি পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় তখন তা মশা নিধনে আরও বেশি কার্যকর হয়ে ওঠে। নতুন পদ্ধতিতে বিকিরণভিত্তিক কৌশলগুলো জীবাণুমুক্ত পুরুষ মশাকে মুক্ত রাখছে, যারা নারী মশার সঙ্গে শুধু একবার সঙ্গমে মিলিত হয়। এতে তাদের প্রজনন কমে আসছে। মশার বংশবৃদ্ধি শতভাগ নিয়ন্ত্রণের কোনো একক কৌশল নেই। কয়েকটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সবচেয়ে কার্যকর ফল পাওয়া সম্ভব। ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তাদের কাজই এখন পর্যন্ত রোগবাহী মশার বংশবিস্তার নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি কার্যকর। গত চার দশকে রক্তপায়ী এ মশা অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ ছাড়া পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।