স্বদেশ ডেস্ক: মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের নতুন সম্রাট হিসেবে অভিষেক নিলেন জ্যঁ-বিডেল বোকাসা ১৯৭৭ সালের ডিসেম্বরে। ওই অভিষেক ছিল খুবই ব্যতিক্রমী এক ঘটনা। সম্রাট বোকাসাকে ইতোমধ্যেই মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের আজীবন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। বোকাসা ছিলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি ১৯৬৬ সালে এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সে দেশের ক্ষমতা দখল করেছিলেন। মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র আফ্রিকার সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর একটি হলেও তার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ছিল অঢেল। চরম নৃশংসতা দেখানোর ব্যাপারে তার বেশ কুখ্যাতি ছিল। বলা হয়ে থাকে বন্দীদের মারামারির সময় তিনি নিজে সেখানে হাজির থাকতেন। মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল। তার পরও বোকাসা ফরাসিদের সবই পছন্দ করতেন। বিশেষভাবে তিনি ছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট চার্লস দ্য গলের দারুণ ভক্ত। সম্রাট বোকাসার কাছে চার্লস দ্য গল ছিলেন ঈশ্বরের মতো। বলা হয় যে, শুধু জেনারেল দ্য গলের সঙ্গে দেখা করার জন্য ফ্র্যাংকো-আফ্রিকান শীর্ষ সম্মেলনের সময় তিনি প্যারিস গিয়েছিলেন। সে সময় তিনি দ্য গলকে ‘পাপা’ (বাবা) বলে ডাকতেন। দ্য গল তাকে বলেছিলেন, বোকাসা তুমি আমাকে পাপা বলে ডেক না। তিনি জবাব দিয়েছিলেন, উই পাপা (হ্যাঁ বাবা)। ক্ষমতা গ্রহণের আগে বোকাসা ২০ বছরেরও বেশি সময় ফরাসি সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। যদিও তিনি ছিলেন একটি স্বাধীন আফ্রিকান দেশের নেতা তবুও তিনি ফ্রান্সের বিষয়ে ছিলেন মোহগ্রস্ত। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ভ্যালেরি দঁস্ত্যাকে নিয়ে তিনি বাঘ-ভালুুক শিকারে যেতেন। তার অভিষেকের জন্য সব সামগ্রী তিনি ফ্রান্স থেকে আনানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি বিশাল একটা সিংহাসন এনেছিলেন। ফ্রান্সের নরম্যান্ডি থেকে এনেছিলেন ৪০ ঘোড়া। ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান যে রকম ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করতেন সে রকম গাড়ি এনেছিলেন। সবুজ ও সোনালি রঙের এই ঘোড়ার গাড়ির জন্য বহু অর্থ ব্যয় করা হয়েছিল।