শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বিছানায় ডেঙ্গু আক্রান্ত বাবা, মেঝেতে ২ বছরের শিশু

বিছানায় ডেঙ্গু আক্রান্ত বাবা, মেঝেতে ২ বছরের শিশু

স্বদেশ ডেস্ক;

কামাল হোসেনের বয়স আনুমানিক ৩৮ বছর। পেশায় তিনি একজন সেলস অফিসার। আকিজ গ্রুপের যশোর অফিসে কাজ করেন। তবে ৭ দিন ধরে তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দায় আছেন। আর বাবার বিছানার পাশেই হাসপাতালের মেঝেতে মাদুরে শুয়ে আছে দুই বছর তিন মাস বয়সী শিশু আবির।

হাসপাতালে বারান্দায় শত শত মানুষ চলাচল করছে। কিন্তু কোনো দিকে খেয়াল নেই ছোট আবিরের। সে নিশ্চিতে ক্লান্ত শরীরে ঘুমাচ্ছে। আর নিজে অসুস্থ হয়েও বিছানায় বসে ছেলের দিকে তাকিয়ে আছেন বাবা।

কামাল হোসেন দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘যশোরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তিনি ঢাকায় এসেছেন। ঢাকায় তার কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই। তার স্ত্রী একাই হাসপাতালের এক রুম থেকে অন্য রুমে দৌড়াচ্ছেন তার রক্তের পরীক্ষা করাতে। তাদের একমাত্র ছেলে আবির বাবা-মাকে ছাড়া থাকতে পারে না। এই জন্য সেওহাসপাতালেই রয়েছে।’

তিনি আরও জনান, হাসপাতালে এদিক সেদিক খেলাধুলা শেষে ক্লান্ত শরীরে মেঝেতেই ঘুমিয়ে পড়েছে আবির। তাই বিছানায় বসে ছেলেকে পাহাড়া দিচ্ছেন তিনি।

হাসপাতালের বারান্দায় মশার উপদ্রপ আছে। এতে করে যে কোনো সময় তার শিশুও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কামাল হোসেন।

কামালের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই হাজির হন তার স্ত্রী শায়লা বেগম।

তিনি জানান,হাসপাতালে শত শত মানুষের সিরিয়ালে থেকে স্বামীর পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে হয় তাকে। তাই ছোট শিশুটিকে একাই রেখে গেছেন তিনি।

কামাল দম্পতি জানান, তারা বিগত ৭ দিন ধরে হাসপাতালে অবস্থান করছেন। কিন্তু এখনো রোগীর তেমন কোনো উন্নতি হচ্ছে না। অপর দিকে হাসপাতালের মশার কামড়ে সন্তানসহ মাও ডেঙ্গু আক্রান্ত  হন এই আশঙ্কায় দিন পার করছেন তারা।

কামালের বেডের পাশেই শাজাহান নামে আরেক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী আছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন তার স্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমাদেরও চার বছরের একটা মেয়ে আছে। কিন্তু ওকে একদিনও হাসপাতালে আনিনি। বাসার ওর দাদির সঙ্গে রয়েছে। এখানে তো আমরাই নিরাপদ না। কখন মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়, তাই বাচ্চাকে নিয়ে আসিনি।’

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, এ বছর গতকাল শনিবার পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ৫২৮ জন রোগী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। আর গতকাল বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ২ হাজার ৬৭১ রোগী ভর্তি ছিল। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়া ৬৮৩ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছর ডেঙ্গুতে ৩৫ জন মারা গেছে। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা মাত্র ৮।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877