শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৯:৩৪ অপরাহ্ন

পানির দাম কমানোর ঘোষণায়ও ক্ষোভ কমছে না সিলেটে

পানির দাম কমানোর ঘোষণায়ও ক্ষোভ কমছে না সিলেটে

স্বদেশ ডেস্ক: সিলেট নগরে পানির দাম কমানোর ঘোষণায়ও স্বস্তি ফিরছে না। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কথায় আশ্বস্ত হতে পারছে না আন্দোলনে থাকা নগরবাসী। তাদের দাবি- পানির দাম না কমিয়ে পূর্বের দামে ফিরিয়ে নেয়া হোক। যদি পূর্বের দামে ফিরিয়ে না নেয়া হয় তাহলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা। করোনার এই যাঁতাকলে সিলেট সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে গত ১লা জুলাই থেকে নগরের পানির বিল দিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। মাসিক সভায় সিদ্বান্ত নিয়ে সেটি করা হয়। নগরবাসীর সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে পানির বিল বাড়িয়ে দেয়ায় নগরবাসীর মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। দিন দিন আন্দোলন দানা বাঁধছে।

একেক করে প্রতিটি এলাকার মানুষ পানির মূল্য বাড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তারা মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। ইতিমধ্যে নগরীর ৬, ৫ ও ১৭নং ওয়ার্ডে একাধিকবার নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এই অবস্থায় গত সপ্তাহে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী পানির মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিলেও নগরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরছে না। সিলেট সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন- সিলেট নগরীতে প্রতিমাসে পানির বিলের জন্য ভর্তুকি দিতে হচ্ছে ৫-৬০ লাখ টাকা। বিশেষ করে নিরবচ্ছিন্ন পানি নিশ্চিত করতে প্রতি মাসে বিদ্যুতের বিল গুনতে হচ্ছে। এ কারণে পানির মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে তারা মনে করছেন- পানির অপচয় রোধ, চুরি কমানো গেলে দাম না বাড়ানো হলেও বিষয়টির সমন্বয় করা সম্ভব। এ কারণে পানির অবৈধ লাইনসহ নানা বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ছুটে যাচ্ছে সিটি করপোরেশনের অনুসন্ধানকারী দল। এদিকে, সিটি কর্পোরেশনের পানির বিল পুনর্বিবেচনায় মেয়র বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন ১৮নং ওয়ার্ডবাসী। গত রোববার সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে এই স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি দেন তারা। স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, বর্তমানে সিলেট সিটি করপোরেশনের পানির বিল নিয়ে মানুষ দিশাহারা। যে হারে পানির বিল বাড়ানো হয়েছে তা সাধারণ মানুষের পক্ষে পরিশোধ করা কষ্টসাধ্য। বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে দেশের মানুষ এখন কর্মক্ষেত্র থেকে বঞ্চিত। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে বর্ধিত পানির বিল পূর্বের অবস্থায় রাখার আহ্বান জানান তারা। এ সময় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আন্দোলনকারীদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, বিষয়টি তিনি পুনর্বিবেচনায় নেবেন। এ ব্যাপারে সবার সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু মেয়রের এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। তারা জানান- পূর্বের ন্যায় পানির দাম রাখতে হবে। এই দাবি এখন স্পষ্ট। হঠাৎ করে দ্বিগুণ পানির দাম বৃদ্ধি কেউ মেনে নেবে না। এজন্য প্রয়োজনে তারা আন্দোলনে নামবেন বলে জানান। স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন ১৮নং ওয়ার্ডবাসীর পক্ষে ঝরণা তরুণ সংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমদ, সদস্য সাজুওয়ান, মুরাদ আহমদ, কামরান আহমদ, শাহাদত আহমদ মাছুম, আব্দুর রহমান, মামুন আহমদ, আব্দুল আহাদ, মো. আব্দুল মতিন, মো. আশিক হোসেন, ডা. মোহাম্মদ জাকারিয়া, মো. মহসিন, মো. তারু মিয়া, এ. কে. এম. আলী আজগর, আব্দুস সাত্তার প্রমুখ। সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃক অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক হারে পানির বিল বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে পানির বিল সহ্য সীমার মধ্যে নির্ধারণের দাবিতে নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ডের সবক’টি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কাজীটুলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাংবাদিক মিসবাহ উদ্দীন আহমদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল জানিয়েছেন, ‘আমাদের ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ফয়জুল আনোয়ার আলাউর, কাউন্সিলর মো. রাশেদ আহমদ ও বিভিন্ন এলাকার মুরুব্বিদের পরামর্শে একটি সমন্বিত মতবিনিময় সভা করেছি। এতে মেয়রের ঘোষণা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সবাই পূর্বের ন্যায় পানির বিল রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছেন।’ শুক্রবার রাতে কাজীটুলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ভবনের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত সভায় সিটি করপোরেশনে স্মারকলিপি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কাজীটুলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি সাবেক কাউন্সিলর ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ক্রীড়া সংগঠন মোখলেছুর রহমান বাবলুর পরিচালনায় সভায় ওয়ার্ডবাসীর দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. রাশেদ আহমদ। সভায় নিবন্ধনভুক্ত ক্লাব কাজীটুলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি (কেডব্লিউএস), অন্তরঙ্গ সমাজ কল্যাণ সংস্থা, আজাদী সমাজ কল্যাণ সংস্থা, বিহঙ্গ তরুণ সংঘ, অগ্রদূত ক্রীড়া চক্র, নিলয় সমাজ কল্যাণ সংস্থা, ওয়েভস সমাজ কল্যাণ সংঘ, জালালী সমাজ কল্যাণ সংস্থা, চতুরঙ্গ ক্রীড়া চক্র, সুরমা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার গ্রুপসহ সকল সামাজিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার মরুব্বিবর্গও উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময়কালে সকলেই অবিলম্বে বর্ধিত বিল প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি নগরবাসীর ধৈর্য্যসীমার মধ্যে একটি নতুন বিল নির্ধারণের দাবি জানান মেয়রসহ সকল কাউন্সিলরদের কাছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন মুরুব্বি কামরান আহমদ কামাল, মো. আব্দুল আজিজ, আব্দুল মুমিন খান বাচ্চু, কামাল আহমদ চৌধুরী আলমগীর, হাবিবুর রহমান খছরু, সোলেমান খান, আব্দুর রফিক, মো. রুহেল আহমদ, আবু আহমেদ, লাল মিয়া, মো. ফারুক খান, জুনেদ আহমদ, আব্দুল আহাদ এলিস, জামিল আহমদ, মোহাম্মদ আকবর, জাকারিয়া হোসেন, মনোয়ার বক্ত শাকিল, কার্নাজ রহিম জিহান, মিফতাহ উদ্দিন আহমদ মিয়াদ, ফয়সাল আহমদ, নাঈম আহমদ, অনিক, মন্তাজ হোসেন মুন্না প্রমুখ।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877