স্বদেশ ডেস্ক:
দেশের প্রচুর মানুষ নানা কারণে বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যায় ভোগেন। যার মধ্যে অন্যতম আত্মহত্যা প্রবণতা। পরিসংখ্যান বলছে, দেশে প্রতিবছর অন্তত ১০ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেন। তবে গত বছর থেকে শুরু হওয়া করোনা মহামারীর প্রথম দশ মাসে দেশে আত্মহনন করেছেন অন্তত ১৪ হাজার মানুষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। গতকাল সোমবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘স্পেশাল ইনিশিয়েটিভ ফর মেন্টাল হেলথ’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, দেশের ১৮ শতাংশ মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত। শিশুদের মধ্যে এই হার ১২ শতাংশ। ১৪ বছর বয়সের আগেই ৫০ শতাংশ এবং ২৫ বছর বয়সের আগেই ৭৫ শতাংশ মানুষের মধ্যে মানসিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, দেশের মানুষ নানা কারণে মানসিক সমস্যায় ভোগে। কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে মানসিক সমস্যা হ্রাস করা সম্ভব। তবে দেশে সেই সুযোগও অত্যন্ত কম। এ ছাড়া আমাদের দেশে মানসিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বল্পতা রয়েছে। বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য মানুষকে ঢাকায় আসতে হয়। তাই স্বাস্থ্যসেবা বিকেন্দ্রীকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আট বিভাগে আটটি পৃথক বার্ন, কিডনি ও ক্যানসার হাসপাতাল করা হবে। এ ছাড়া সব জেলা হাসপাতালে করা হবে ১০ শয্যার আইসিইউ এবং ১০ শয্যার ডায়ালাইসিস ইউনিট।
করোনা ভাইরাসের নয়া ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত জিম্বাবুয়ে ফেরত জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের দুজন সুস্থ আছেন। এখন পর্যন্ত তাদের মাধ্যমে অন্য কারও শরীরে ওমিক্রন ছড়ায়নি বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই এ বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়া ইউরোপ, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ আমাদের দেশে আসছে। কাজেই আমরা যদি নিজেরা সতর্ক না হই, তা হলে ওমিক্রন ঠেকিয়ে রাখা খুবই কঠিন। আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। করোনা হাসপাতাল যেগুলো ছিল, সেগুলোকে যেভাবে আমরা প্রস্তুত করেছিলাম, সেগুলো সে অবস্থাতেই আছে। বরং ওমিক্রন মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোকে আপগ্রেড করা হচ্ছে। আমাদের টিকা নিয়েও কোনো শঙ্কা নেই। ৩০ কোটি ডোজ টিকা এরই মধ্যে সংগ্রহ করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ৪ কোটি ডোজ এখনো মজুদ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. বার্ধন জং রানা, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম রাব্বানী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এনসিডিসি) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন প্রমুখ।