শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন

ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখবে ঢাকা

ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখবে ঢাকা

স্বদেশ ডেস্ক:

র‌্যাবের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনায় ‘ক্ষুব্ধ’ হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখবে বাংলাদেশ। সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে আগামীতে যোগাযোগ ও সহযোগিতার সম্পর্ক আরও বাড়বে বলেও প্রত্যাশা বাংলাদেশের। তবে নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া বা কূটনৈতিক পদক্ষেপ কী হওয়া উচিত, তা নিয়ে সরকারি পর্যায়ে নানা আলোচনা-পরামর্শ চলছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ নিষেধাজ্ঞাকে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখায় মনোযোগী হতে হবে। এ ছাড়া আগামীতে সম্পর্ক স্বাভাবিক গতিতেই চলবে বলে মনে করেন তারা। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন দুদেশের মধ্যে যোগাযোগ ও আলোচনার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়বে।’

গত শনিবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারকে তলব করে বাংলাদেশের অসন্তোষের কথা জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই একতরফা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। আর্ল মিলার বাংলাদেশ সরকারের উদ্বেগের বিষয়টিকে আমলে নিয়ে তা ওয়াশিংটনে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দেন।

পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচনার সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত এ অভিমতও দেন যে দুই দেশের চমৎকার ও বহুমাত্রিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার সুযোগ রয়েছে। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মার্কিন সরকারের ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকতে চাওয়ার সদিচ্ছার বিষয়টিও আর্ল মিলার উল্লেখ করেন।

দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার সর্বোচ্চ ফোরাম ‘পার্টনারশিপ ডায়ালগ’-এর তারিখ চূড়ান্ত করতে কয়েক মাস ধরে ঢাকা-ওয়াশিংটন চিঠি চালাচালি চলছে। ওই সংলাপ এবার ঢাকায় হওয়ার কথা। আগামী জানুয়ারিতে সংলাপটি হতে পারে মর্মে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত মিলেছিল। কিন্তু কয়েক দিন আগে ওয়াশিংটন তা পিছিয়ে দিতে ঢাকাকে অনুরোধ জানায়। সেই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সংলাপটি পিছিয়ে (জানুয়ারির বদলে) ফেব্রুয়ারি বা মার্চে করার চিন্তাভাবনা চলছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সিকিউরিটি ডায়ালগ (নিরাপত্তা সংলাপ) হওয়ার কথা রয়েছে। সেটির তারিখ প্রায় চূড়ান্ত। সুনির্দিষ্টভাবে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় সিকিউরিটি ডায়ালগ। এটি এবার ওয়াশিংটনে হবে। তাই সিকিউরিটি ডায়ালগের আগেই ঢাকায় পার্টনারশিপ ডায়ালগ সারতে চায় বাংলাদেশ, যেখানে সম্পর্কের স্পর্শকাতর সব ইস্যু নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী সরকার। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ভূ-রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশের ভারসাম্যগত অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকার সব সময় সব পক্ষের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে চলছে। এটাই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি।’

নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে কূটনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে আমাদের এত গুরুত্ব দেওয়া ঠিক হবে না। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে আমাদের পররাষ্ট্র সচিব যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তবে দেশটির সঙ্গে আমাদের নানাবিধ সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে। সেটি অব্যাহত থাকবে এবং প্রয়োজনে বাড়বে। সরকার সব সময় সব পক্ষের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে। এটাই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি। তবে একই সঙ্গে এটাও ঠিক, বর্তমান বাংলাদেশ এবং ২০ বছর আগের বাংলাদেশ এক নয়।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877