শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
রেমিট্যান্স প্রণোদনায় জটিলতা

রেমিট্যান্স প্রণোদনায় জটিলতা

স্বদেশ ডেস্ক;

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রণোদনার অর্থ ছাড় নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। প্রত্যক্ষ নয়, পরোক্ষ রেমিট্যান্স আসে এমন খাতের বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতেও ব্যাংকগুলো প্রণোদনার অর্থ চাচ্ছে। এর মধ্যে আছে, প্রবাসে কর্মরতদের অবসরপ্রাপ্ত সুবিধা, পেনশন তহবিল, প্রভিডেন্ট ফান্ড।

এছাড়া অবসরকালীন ছুটির বেতন-ভাতা, বোনাস ও অন্যান্য গ্র্যাচুইটি এবং অবসর সুবিধাও এর অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, শুধু সরাসরি বা প্রত্যক্ষ রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দেওয়ার নিয়ম আছে। পরোক্ষ রেমিট্যান্সে দেওয়ার নিয়ম নেই। এ কারণে ব্যাংকগুলো ওইসব খাতে প্রণোদনার অর্থ চাইলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা ছাড় করছে না।

এদিকে প্রবাসীরাও বিভিন্ন দেশ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে ফোন করে ওইসব রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রণোদনার অর্থ দাবি করছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে আলোচ্য বিষয়ে মত চেয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহত গতিতে কমতে থাকায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আলোকে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করা হয়।

এতে বলা হয়, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের কস্টার্জিত বৈদেশিক আয় বৈধ উপায়ে দেশে আসার পর ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে। এটা প্রযোজ্য হবে সরাসরি বা প্রত্যক্ষ রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে। এর মধ্যে রয়েছে প্রবাসীদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা। কিন্তু পরোক্ষ রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দেওয়ার নিয়ম নেই।

পরোক্ষ রেমিট্যান্স বলতে, প্রবাসে কর্মরতদের অবসরপ্রাপ্ত সুবিধা, পেনশন তহবিল, প্রভিডেন্ট ফান্ড, অবসরকালীন ছুটির বেতন-ভাতা, বোনাস ও অন্যান্য গ্র্যাচুইটি এবং অন্যান্য অবসরজনিত সুবিধা বা অন্যান্য আয়কে বোঝায়।

২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে বৈধ উপায়ে যেসব প্রত্যক্ষ রেমিট্যান্স দেশে আসছে সেগুলোর বিপরীতে প্রণোদনা দেওয়া হ”েচ্ছ। কিন্তু পরোক্ষ রেমিট্যান্সে এখন পর্যন্ত কোনো প্রণোদনা দেওয়া হয়নি। রেমিট্যান্স দেশে এলে তা কোন খাতে কিভাবে এসেছে সে বিষয়ে একটি বিবরণী ব্যাংকগুলো থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়। এর আলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ রেমিট্যান্স শনাক্ত করে। এখন পর্যন্ত যেসব পরোক্ষ রেমিট্যান্স শনাক্ত করা হয়েছে সেগুলোর বিপরীতে প্রণোদনার অর্থ ছাড় করা হয়নি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ে দেওয়া চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, বিদ্যমান নীতিমালায় পরোক্ষ রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রণোদনা পাওয়ার সুযোগ নেই। এতে বলা হয়, বৈদেশিক খাতে লেনদেনের যে কোড লিস্ট আছে তাতে এসব বিষয় রেমিট্যান্স খাতের সেকেন্ডারি ইনকাম হিসাবে বিবেচিত। কাজেই এগুলো রেমিট্যান্স হিসাবে বিবেচিত হয় না। এসব খাতে প্রণোদনার অর্থ দেওয়া হবে কিনা এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে।

রেমিট্যান্সের বিপরীতে সরকারিভাবে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। তবে অগ্রণী ব্যাংক নিজস্ব তহবিল থেকে আরও ১ শতাংশ বেশি অর্থাৎ ৩ শতাংশ দিচ্ছে।

রেমিট্যান্সের গতিবিধি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরে বেড়েছিল সাড়ে ১২ শতাংশ। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে কমে ১ দশমিক ৬১ শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সাড়ে ৭ শতাংশ বাড়ে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা আবার আড়াই শতাংশ কমে যায়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কমে সাড়ে ১৪ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আবার প্রায় সাড়ে ১৭ শতাংশ বাড়ে। পরের বছর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশে দাঁড়ায়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে রেমিট্যান্স প্রবাহের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ২ শতাংশ প্রণোদনার ঘোষণা হয়। এর আলোকে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নীতিমালা জারি করা হয়। প্রণোদনার পর রেমিট্যান্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি বেড়ে প্রায় ১১ শতাংশে দাঁড়ায়। গত অর্থবছরে এ খাতে প্রবৃদ্ধির হার আরও বেড়ে ২৬ দশমিক ১০ শতাংশে দাঁড়ায়। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে নভেম্বর পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রবাহে নিম্নগতি চলছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877