স্বদেশ ডেস্ক: আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির সাথে কারাগারে দেখা করেছেন তার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা। শনিবার বেলা ১১ টার দিকে তারা জেলা কারাগারের সামনে এসেছিলেন। তারা মিন্নির সাথে দেখা করে মলিন মুখে চলে গেছেন।
এ সময় মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর অনেকটা ক্ষুব্ধ ছিলেন। তিনি কোন মতামত দিতে রাজি না হলেও রাগের সাথে বলেছেন, তার মেয়ে ভাল নেই-বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেন। সাদা পোশাকধারী পুলিশের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের জন্য মেয়ের সাথে মন খুলে কথা বলতেও পারেন না। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গেলেও তারা কাছে এসে দাঁড়িয়ে থাকেন।
আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গত ১৬ জুলাই রাত ৯টার দিকে গ্রেফতার করে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয়। পরের দিন বিকেল সোয়া তিনটার দিকে কারাগার থেকে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
রিমান্ডে নিয়ে ৪৮ ঘন্টা পরেই ১৯ জুলাই বেলা ২ টার দিকে মিন্নিকে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ৭ টার দিকে মিন্নিকে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পরেরদিন সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির সাথে তার বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা দেখা করে জানান, মিন্নিকে পুলিশ শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। গত ২২ জুলাই বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী আসলাম হাসপাতালে নিয়ে মিন্নির চিকিৎসা ও তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের জন্য বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে আবেদন করেন। বিচারক তার আবেদন নামঞ্জুর করে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মিন্নিকে আবেদন করার পরামর্শ দিয়ে আইনজীবীর হাতে হাতে ওইদিনের আবেদনপত্র ফেরত দিয়েছেন।
গত ২৪ জুলাই আইনজীবী এডভোকেট মাহাবুবুল বারী আসলাম কারাগারে গিয়ে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির সাথে কথা বলেছেন। তিনি কারাগার থেকে বের হয়ে জানান, মিন্নিকে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। মিন্নি ভালভাবে হাঁটতে পারেন না। তার চিকিৎসা দরকার। আজও একই কথা বলেছেন, মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। যদিও শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টায় বরগুনা সিভিল সার্জন অফিসের ডা. হাবিবুর রহমান কারাগারে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির খোঁজ-খবর নিয়ে জানিয়েছেন, তিনি সুুস্থ আছেন।