শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭ অপরাহ্ন

বৈষম্য বাড়লে কর ফাঁকি দিয়ে টাকা পাচারও বাড়ে

বৈষম্য বাড়লে কর ফাঁকি দিয়ে টাকা পাচারও বাড়ে

স্বদেশ ডেস্ক:

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বলেছেন, গত ৫০ বছরে দেশে দারিদ্র্য ব্যাপক কমেছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে বৈষম্যও বেড়েছে। বৈষম্য বেড়ে গেলে কর ফাঁকি দিয়ে বিদেশে টাকা পাচারও বেড়ে যায়। যেসব দেশের কর কম, সেসব দেশেই টাকা চলে যায়। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এখন রাজনৈতিক সমস্যা। গতকাল বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) তিন দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি মূল প্রবন্ধে এসব কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এ সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় মূল প্রবন্ধটি উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে সম্মেলন উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়েন বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

অর্থনীতিবিদ নুরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত রেমিট্যান্স ও রপ্তানি অর্থনীতিতে বড় অবদান রেখেছে। রেমিট্যান্স গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। তিনি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করতে গবেষণার ওপর জোর দেন।

বাংলাদেশ ইন কমপারেটিভ পার্সপেক্টিভ প্রতিবেদন তুলে ধরে বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেন, গত ৩০ বছরে ভারত-পাকিস্তান থেকে নানা খাতে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। উৎপাদন খাতের অগ্রগতি, নারীর ক্ষমতায়ন ও নগরায়নসহ নানা খাতে প্রতিবেশীদের পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।

তিনি আরও বলেন, ভারতের তামিলনাড়ু, কর্নাটক, কেরালা যেভাবে এগিয়ে গেছে, উত্তর প্রদেশ ও বিহার সেভাবে এগিয়ে যায়নি। এটা যেন ভারতের মধ্যে অন্য ভারত। একইভাবে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে যে উন্নয়ন হয়েছে সেভাবে পিছিয়েছে বেলুচিস্তান। কিন্তু বাংলাদেশে এমন বৈষম্য নেই। তবে বাংলাদেশের সমতলে যেভাবে এগিয়ে গেছে উপকূল ও পাহাড়ি এলাকা সেভাবে এগিয়ে যায়নি। তবে সরকার এসব এলাকা উন্নয়নে কাজ করছে।

মাথাপিছু আয়ে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলা বাংলাদেশ ভারতের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, উৎপাদন খাতেও ভারত পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। নগরায়ন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের সামাজিক সূচকও অনেক ভালো।

একই অনুষ্ঠানে আরেক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও অনেক ক্ষেত্রে অপশাসন (মেলগর্ভনেন্স) রয়েছে। সুশাসনকে পাশ কাটানো হয়েছে। এসব কারণে রানা প্লাজা, তাজরীন ট্র্যাজেডির মতো ঘটনা ঘটেছে। তিনি স্বাধীনতার পর দেশের উন্নয়নে বেসরকারি সংস্থার ভূমিকার প্রশংসা করেন। এসব উন্নয়ন সংস্থাকে তিনি ‘সামাজিক উদ্যোক্তা’ হিসেবে অভিহিত করেন।

তার মতে, এসব এনজিও গ্রামীণ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। গ্রামীণ ব্যাংক পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী সংস্থা। আর ব্র্যাক বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিও। এগুলো বাংলাদেশের এনজিও খাতের সাফল্য নির্দেশ করে।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে। গত এক দশক ‘গেম চেঞ্জের’ দশক ছিল। বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877