রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন

ওমিক্রনের বিরুদ্ধে প্রচলিত টিকা কতটুকু কার্যকর

ওমিক্রনের বিরুদ্ধে প্রচলিত টিকা কতটুকু কার্যকর

স্বদেশ ডেস্ক;

করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বিশ্বজুড়ে মহামারী সৃষ্টির পর অবিশ্বাস্য দ্রুততায় মাত্র এক বছরের মধ্যে এর টিকা বাজারে আনতে সক্ষম হয়েছে বেশ কয়েকটি কোম্পানি। এই টিকা মানুষকে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে না পারলেও গুরুতর অসুস্থ হওয়া ও মৃত্যু ঠেকাতে পারছে বলেই প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফলে দেশে দেশে চলছে অব্যাহত টিকাদান। তবে টিকাদানের এই সাফল্য ভেস্তে যাওয়ার হুমকি তৈরি করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উদ্ভূত করোনা ভাইরাসের নয়া ধরন ওমিক্রন। অনেক বিজ্ঞানীই মনে করছেন, ভয়ঙ্কর সংক্রামক ওমিক্রন টিকার প্রতিরোধকে হারিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। ফলে করোনার বিদ্যমান টিকাগুলো নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছে, ওমিক্রনের বিপরীতে টিকার প্রতিরোধ কতটা টিকবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে মার্কিন কোম্পানি ফাইজার ও মডার্নার মতো যেসব টিকা আরএনএভিত্তিক, সেগুলোকে প্রয়োজন অনুযায়ী ভাইরাসের নতুন ধরনের জন্য লড়াইয়ে বদলে নেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে। ফাইজার ও মডার্নাও জানিয়েছে, ওমিক্রনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে টিকার ফর্মুলা নতুন করে সাজানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে মডার্নার সিইও স্টিফেন বানসেল শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, ওমিক্রন ঠেকাতে প্রচলিত টিকাগুলো ভালো কাজ নাও করতে পারে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এটা নিশ্চিত হওয়া যাবে যে, প্রচলিত টিকা ওমিক্রনে কাজ করবে কিনা। এই ধরনের জন্য নতুন একটি টিকা তৈরি করতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। তবে মর্ডানার প্রেসিডেন্ট ড. স্টিফেন হোগে দাবি করেছেন, ওমিক্রনের বিরুদ্ধে তাদের কোম্পানি সবার আগে কাজ শুরু করেছে। যদি প্রয়োজন হয়, দুই মাসের মধ্যে তারা টিকার নতুন সংস্করণ আনতে পারবেন। তবে এর কার্যকারিতা পরীক্ষার ফল জানাতে তিন মাসের মতো সময় লাগবে।

ফাইজারের মুখপাত্র জেরিকা পিটস বলেন, ওমিক্রনের বিষয়টি মাথায় রেখে তাদের বিজ্ঞানীরা আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যমান টিকার পরিবর্তন করতে পারবে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী ১০০ দিনের মধ্যে টিকা সরবরাহ করা যাবে। মার্কিন আরেক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনও ইতোমধ্যে ওমিক্রনের কৃত্রিম একটি সংস্করণের বিরুদ্ধে তাদের টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষার পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।

ওমিক্রন নিয়ে টিকার শক্তি বাড়াতে কাজ শুরু করেছে অ্যাংলো-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকাও। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, অ্যাস্ট্রাজেনেকা মনে করছে, ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে নিজেদের অ্যান্টিবডি ককটেল এজেডডি৭৪৪২ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করছে তারা। এই অ্যান্টিবডি ককটেলের কার্যকারিতা বাড়াতে ইতোমধ্যে নিজেদের টিকা ব্যবসার পার্টনার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করছে কোম্পানিটি। সিআরআই অনলাইন জানিয়েছে, ওমিক্রন নিয়ে কাজ শুরু করেছে চীনের সিনোফার্মও।

বিপদ নয় ‘আশীর্বাদ’ হতে পারে ওমিক্রন!

করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ক্রমেই বাড়ছে। এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ভাইরাসটির নতুন ধরন বিশ্বকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। যদিও ওমিক্রন ঠিক কতটা ভয়ঙ্কর বা সংক্রামক তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি কেউ। তবে এই পরিস্থিতিতেও যেন উল্টো পুরাণ শোনাচ্ছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে, যদি শেষ পর্যন্ত যাবতীয় সতর্কতা সত্ত্বেও ছড়িয়ে পড়ে ওমিক্রন, তাতে বিপদের পরিবর্তে হয়তো তা শাপে বর হতে পারে।

বেলজিয়ামের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ মার্ক ভ্যান র‌্যানস্ট বলেছেন, যদি ওমিক্রন কম বিপজ্জনক অথচ বেশি সংক্রামক হয়ে ওঠে, তা হলে এটি করোনার ডেল্টাকে হটিয়ে প্রধান সংক্রামক ধরন হয়ে উঠবে, যা বিশ্ববাসীর জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক ব্যাপার হবে। কারণ এ মুহূর্তে পৃথিবীতে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে ডেল্টা। এই স্ট্রেনেই আক্রান্ত ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ। ভারতে প্রথম সন্ধান মেলা ডেল্টার দাপটেই বহু দেশে করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ আঘাত হেনেছিল। ওমিক্রন যদি ডেল্টার দাপট কমাতে পারে, তা হলে কমতে পারে করোনার ভয়াবহতা। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877