স্বদেশ ডেস্ক:
জোহরা বেগম (৯৫)। বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে। মেয়ের বাড়ি বেড়াতে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। কিন্তু পথ হারিয়ে দিগ্বিদিক ঘোরাফেরা করছিলেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় তাকে রাস্তায় ঘুরতে দেখে স্থানীয় এক কিশোর। পরে ওই বৃদ্ধাকে সে স্থানীয় এক সাংবাদিকের অফিসে নিয়ে যায়। সেখান থেকে জোহরা বেগমকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনুচ আলী।
জানা গেছে, যশোরের বিরামপুর থেকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা জগন্নাথপুর গ্রামে যাবেন বলে বাসে ওঠেন জোহরা বেগম। কিন্তু ভুল বাসে উঠে পড়লে তাকে কালীগঞ্জে নামিয়ে দেওয়া হয়। বয়সের ভারে অচেনা জায়গায় নেমে এদিক-ওদিক ঘুরছিলেন তিনি। এ সময় আশিক নামের এক কিশোর তাকে দেখে স্থানীয় সাংবাদিক জামির হোসেনের অফিসে নিয়ে যায়।
সেখানে জোহরার সঙ্গে কথা হলে তার বাড়ির নাম জানেন জামির হোসেন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে তার মেয়ের স্বামীর নম্বর সংগ্রহ করা হয়। তাতে ফোন দিলে রিসিভ করে তার নাতি। তাকে তার নানির খবর দিয়ে বলা হয় কালীগঞ্জে এসে তাকে নিয়ে যেতে।
কিন্তু উত্তরে বুদ্ধার নাতি জানান, তার বাবা বাসায় নেই। এলে তাকে জানানো হবে। পরে তার কাছ থেকেই জোহরার বড় ছেলের নম্বর সংগ্রহ করেন জামির।
সেই নম্বরে কল করলে রিসিভ করেন জোহরার পুত্রবধূ। তাকে শাশুড়ির কথা বলা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা যশোরে নেই। ঢাকায় থাকি। বাড়ি থেকে উনি বের হলো কেন? উনি (বৃদ্ধা) খুব খারাপ।’ এসব বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
পরে সাংবাদিক জামির হোসেন কালীগঞ্জ থানায় ফোন করে বৃদ্ধার বিষয়টি জানান। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানে তার থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেন থানার ওসি ইউনুচ আলী।
এ বিষয়ে ওসি জানান, জোহরা বেগমের সন্তানদের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু তারা কেউ আসতে রাজি হননি। পরিবারের স্বজনরা না আসা পর্যন্ত উনি হাসপাতালেই থাকবেন।
আজ শুক্রবার সকালে আবার জোহরার মেয়ের স্বামীর নম্বরে কল করা হয়। এ সময় বৃদ্ধার জামাতা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমরা শুনেছি উনি কালীগঞ্জ আছেন। বৃষ্টির কারণে তাকে নিয়ে আসতে পারিনি।’