শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন

সুচির বিরুদ্ধে ‘ভোট জালিয়াতি’র অভিযোগ সামরিক জান্তার

সুচির বিরুদ্ধে ‘ভোট জালিয়াতি’র অভিযোগ সামরিক জান্তার

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেতা অং সান সুচির বিরুদ্ধে দেশটির সামরিক সরকার ‘ভোট জালিয়াতি এবং আইন-বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগ এনেছে।

ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারে সরকার উৎখাতের পর থেকে ৭৬ বছর বয়সী সুচিকে এখনো পর্যন্ত আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি।

মেজর জেনারেল জ মিন টুন বলেছেন, ‘যদিও তাকে অন্তরীণ রাখা হয়েছে। কিন্তু আমরা তাকে তার কাছের মানুষের সাথে এক বাড়িতে থাকতে দিয়েছি।’

‘তিনি যা চান বা যা খেতে চান তার ব্যবস্থা করার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি,’ তিনি বলেন।

কিন্তু সুচির আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, মামলা নিয়ে গৃহবন্দি নেতার সাথে প্রকাশ্যে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে দেশটির সামরিক জান্তা।

সেই সাথে জাতিসঙ্ঘের কর্মকর্তারা সুচির সাথে দেখা করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন, কিন্তু তাদের দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি।

জাতিসঙ্ঘ বলছে, সামরিক অভ্যুত্থান মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে, কিন্তু তাদের মিয়ানমারে তদন্তের সুযোগ দেয়া হয়নি।

মেজর জেনারেল জ মিন টুন বলেছেন, জাতিসঙ্ঘকে অনুমতি দেয়া হয়নি কারণ ‘এটা সঠিক সময় নয়…তাদের দাবির সাথে আমরা একমত নই…এবং তারা মিয়ানমার সম্পর্কে যা বলে তা গঠনমূলক নয়।’

তিনি আরো বলেছেন যে, জাতিসঙ্ঘকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর শাসনকে স্বীকৃতি দিতে হবে।

সেনা অভ্যুত্থানকে বৈধতা দিয়ে দেশটির সামরিক জান্তা দাবি করেছে, গত নভেম্বরে হওয়া সাধারণ নির্বাচনে ভোট কারচুপি হয়েছে। ওই নির্বাচনে সুচির দল নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছিল।

নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষকেরা বলেছেন, অধিকাংশ জায়গায় নির্বাচন অবাধ ও স্বচ্ছভাবে হয়েছে, এবং সুচির বিরুদ্ধে অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে বলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার সাবেক প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট এবং নেপিদ’র সাবেক মেয়র মাইয়ো অংসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।

সুচিকে আটকের পর থেকে অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট, দুর্নীতি এবং অবৈধ ওয়াকি-টকি রাখাসহ তার বিরুদ্ধে নানা ধরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তাকে আদালতে তোলা হয়েছে, কিন্তু সেই সংক্ষিপ্ত উপস্থিতির সময়ও তাকে দেখা যায়নি কিংবা তিনি কী বলেছেন তা জানানো হয়নি।

দেশটিতে গণতন্ত্রপন্থী এবং সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধীদের নিয়ে নতুন গঠিত জাতীয় ঐক্যের সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সুচি কষ্টে আছেন।

‘তিনি ভালো নেই…তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হবে, সাজা হবে। তাকে ১০৪ বছরের সাজা দেয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে সেনা জেনারেলরা। তারা চায় উনি জেলে পচে মরেন,’ ডা. সাশা বলেন।

অং সাং সুচি ১৯৮৯ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে প্রায় ১৫ বছর বন্দি ছিলেন।

মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কাজে তার অবদানের জন্য তিনি শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার জেতেন।

সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে, কিন্তু দেশটির একটি আইনের কারণে তিনি নিজেই তখন প্রেসিডেন্ট হননি।

ওই আইনটিতে বলা হয়েছে, সন্তানেরা অন্য দেশের নাগরিক হলে মা বা বাবা রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবেন না। কিন্তু মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেতা হিসেবেই তিনি পরিচিত।

কিন্তু ২০১৭ সালে শুরু হওয়া রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় তার ভূমিকা নিয়ে সুচির সুনাম ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়।

সংখ্যালঘু মুসলমান রোহিঙ্গাদের গণহারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করার ঘটনাকে তিনি একেবারেই গুরুত্ব দেননি বলে সমালোচিত হয়েছে।

সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877