মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের বাড়ি-গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন এসকে সিনহা

যুক্তরাষ্ট্রের বাড়ি-গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন এসকে সিনহা

স্বদেশ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন দীর্ঘদিন ঝুলে থাকায় সেখানকার বাড়ি, গাড়ি ও অন্যান্য সম্পত্তি বিক্রি করে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছেন আলোচিত সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা। তিনি সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। কানাডাতেও তার দুটি বাড়ি রয়েছে। সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন তার স্ত্রী সুষমা সিনহাও। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে থাকা ঘনিষ্ঠ এক বান্ধবীর মাধ্যমে এসকে সিনহা লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে বিচারপতি সিনহা তেমন একটা ইতিবাচক সাড়া পাননি। তরুণ এক ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এবং বিচারপতি সিনহার বক্তব্য ‘সন্তোষজনক নয়’ জানিয়ে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য রিফিউজিবিষয়ক আদালতে পাঠিয়ে দেন। এর পর আর তার আবেদনের কোনো অগ্রগতি হয়নি। এরই মধ্যে তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি কানাডাকে পরবর্তী গন্তব্য হিসেবে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যুক্তরাষ্ট্রে শুধু এসকে সিনহা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। কানাডায় তার সঙ্গে তারও স্ত্রীও আবেদন করেছেন।

সূত্র জানায়, গত ৪ জুলাই সড়কপথে কানাডায় গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চান বিচারপতি সিনহা। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নিজে গাড়ি চালিয়ে কানাডা যান তিনি। টরেন্টোর স্কারবোরো এলাকায় একটি কন্ডোমিনিয়াম ভাড়া নিয়ে আপাতত সেখানেই তিনি স্ত্রী-কন্যাসহ থাকছেন। তার আবেদনের ওপর আগামী মাসে শুনানি হবে।

বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি হিসেবে এবং তাকে ঘিরে ঘটনা প্রবাহের কারণে কানাডায় আবেদন করার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যাপারে ‘টেবল ডিসিশন’ হয়ে যাবে, অনেকে এমন ধারণা করলেও বিচারপতি সিনহার ক্ষেত্রে সেটি ঘটেনি। এক মাস পর শুনানির তারিখ দেওয়া হয়েছে তাকে।

কানাডার সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, তৃতীয় নিরাপদ কোনো দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করা হলে তিনি কানাডায় প্রবেশের অনুপযুক্ত হবেনÑ মর্মে কানাডায় একটি নতুন আইন হয়েছে। সেই আইনের বিধিতে বিচারপতি সিনহা রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়ার যোগ্য নন। এর পরও তার আবেদনপত্র গ্রহণ করে শুনানির সুযোগ দেওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিচারপতির সিনহার ঘনিষ্ঠজনরা।

টরেন্টোয় বসবাস শুরু করলেও বিচারপতি সিনহা খানিকটা নিরিবিলিই থাকছেন। এর মধ্যে তিনি স্থানীয় একটি মন্দিরে গেছেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে টানাপড়েন চলাকালে বিশেষভাবে আলোচনায় আসা একজন ব্যবসায়ী আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াতেও গেছেন। ওই দাওয়াতে নিউইয়র্ক থেকে তার কয়েকজন বন্ধুও যোগ দিয়েছিলেন বলে জানা যায়।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে এসকে সিনহার সঙ্গে শাসক দলের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। ওই রায়ে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি অপসারণে জাতীয় সংসদের ক্ষমতা বাতিল করা হয়। এর পর ক্ষমতাসীনরা বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেন। এতে চাপে পড়ে একপর্যায়ে তিনি ছুটিতে যান। এর পরও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ২০১৭ সালের ১৭ নভেম্বর তিনি বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র দাখিল করেন। ঢাকা থেকে প্রথমে তিনি সিঙ্গাপুর যান। এর পর অস্ট্রেলিয়া হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877