শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চীনের নিষেধাজ্ঞা উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্প বাংলাদেশ মিশনে হামলা, হিন্দু সংগঠনটির বয়স ১ সপ্তাহ! আজ থেকে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব? তারেক রহমানের দেশে ফেরা-আইনি প্রক্রিয়ার বাইরেও আছে রাজনৈতিক সমীকরণ রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক থেকে বেরিয়ে যা বললেন আহমাদুল্লাহ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা ভালো আছেন : হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট ধর্ম ও মতের পার্থক্য থাকলেও আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য : প্রধান উপদেষ্টা
তারা ১৩ জন ই-কমার্স ব্যবসার ঘাতক

তারা ১৩ জন ই-কমার্স ব্যবসার ঘাতক

স্বদেশ ডেস্ক:

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অনলাইন বাজারের বিস্তৃতি। প্রচলিত বিক্রয়ব্যবস্থার বাইরে অনলাইনে বিভিন্ন পণ্য এখন বিক্রি হচ্ছে সাশ্রয়ী দামে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব পণ্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকের দোরগোড়ায়। ফলে দেশে ক্রমেই বাড়ছে এর জনপ্রিয়তা; পরিধি বাড়ছে ই-কমার্স ব্যবসার। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভুয়া অনলাইন পেজ খুলে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র; নতুন নতুন সদস্য যুক্ত করে ক্রমেই পাল্লা ভারী করছে তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ক্রেতারা ধীরে ধীরে আস্থা হারিয়ে ফেলবেন; মুখ থুবড়ে পড়বে সম্ভাবনাময় এ খাত।

গত মঙ্গলবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও মৌচাক এলাকায় অভিযান চালিয়ে ই-কমার্সের নামে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। এর পর তাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে আরও তথ্য পেতে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে-চক্রের মূলহোতা ওমর আলী, মো. সজীব শেখ, মো. সোহেল রানা, মো. সৌরভ মজুমদার, মো. অমিত হাসান, মো. ইসাহাকুল ইসলাম আশিক, মো. আব্দুল করিম, রিয়াজুল জাহান জিনিল, মো. রাকিবুল হাসান, মো. রাব্বি, মো. শরিফুল ইসলাম, শ্রী বলরাম মণ্ডল ও মো. হাবিব। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে ৯১টি মোবাইল ফোন, ৫টি ল্যাপটপ, একটি পিসি, ১টি প্রিন্টার, ৩০টি শাড়ি, ১০টি থ্রিপিসসহ নিম্নমানের নানা পণ্য ও প্যাকেজিং মালামাল জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানায়, তারা ফেসবুকে মিম ফ্যাশন, নিউ ফ্যাশন বিডি, কেজেড ফ্যাশন, রোজ ফ্যাশন বিডি, বিক্রয় বাজার বিডি, ইন্ডিয়ান থ্রিপিস গ্যালারি, শাধমার্ট বিডি, এসএম ফ্যাশন, স্টাইল জোন, এমজেড ফ্যাশন স্নিগ্ধা, ফ্যাশন, সানজু ফ্যাশন, শাড়িস হাউজ, বিশ্ব বাজার, ব্র্যান্ড শপসহ বিভিন্ন নামে পেজ খুলে গুগল থেকে ছবি ডাউনলোডের পর এডিট করে পেজে আপলোডের মাধ্যমে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে।

ক্রেতারা যে পণ্যেরই অর্ডার করুক না কেন, প্রতারকরা তাদের মজুদ করা নিম্নমানের পণ্য এবং অত্যন্ত কমদামি ইলেক্ট্রনিক পণ্য সরবরাহ করে। কখনো কখনো তারা খালি বাক্স স্কচটেপ সেঁটেও পাঠিয়ে দেয়। একটি পেজ দিয়ে বেশ কয়েকদিন প্রতারণা করে আবার নতুন পেজ খুলে নতুন উদ্যমে চালিয়ে যায় ব্যবসার নামে প্রতারণা।

সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের শুটিং ইনসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার আশরাফ উল্লাহ আমাদের সময়কে বলেন, এরা সবাই বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এই চক্রটি অনলাইনে বিভিন্ন পেজ খুলে নানা কৌশলে প্রতারণা করে আসছিল। আমরা ইতোমধ্যে এমন শতাধিক পেজ শনাক্ত করেছি।

অনলাইনে পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি জানান, তার স্ত্রী হোসনে আরা খানম রোজী গত ২৫ এপ্রিল ‘ফ্যাশন টাচ’ নামের একটি অনলাইন শপ থেকে দুটি গাউন অর্ডার করেন। সে হিসাবে ২৭ এপ্রিল এলিফ্যান্ট রোডের গাউছিয়া সংযোগ সড়কসংলগ্ন এসএ পরিবহনের মাধ্যমে গাউন দুটি পাঠালে ৪ হাজার ৫০০ টাকা পরিশোধ করা হয়। পরে বাসায় এসে প্যাকেট খুললে দুটি দেড়শ টাকা মূল্যের শাড়ি বেরিয়ে আসে।

পরে আমার স্ত্রী অনলাইন শপের পেজে দেওয়া নম্বরে ফোন করে বিষয়টি তাদের অবহিত করে। তারা এক সপ্তাহের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দেয়; কিন্তু সপ্তাহ পার হওয়ার পর তারা ফোন রিসিভ করা বন্ধ করে দেয়। পরে তাদের ক্যাশ মেমোতে উল্লেখিত মৌচাকের ১৫৪/২-এ নম্বর দোকানেরও কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে চলতি মাসের ২২ তারিখে প্রতারণার অভিযোগ এনে নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা (নং-১২) দায়ের করা হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, ই-কমার্স প্রতারণাচক্রের মূলহোতা ওমর আলী। তারা মৌচাক মার্কেটের ৪র্থ তলায় একটি দোকান ভাড়া নিয়ে একেকজন এক একটি অনলাইন পেজ চালাতেন। আর পেজগুলোতে দেওয়া হতো ভুয়া ঠিকানা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে পণ্যের দামও ধরা হতো খুবই অল্প। তাদের রকমারি পণ্যের মধ্যে কেউ যদি পোশাক অর্ডার করতেন, তা হলে সেটি যত দামিই হোক না কেন, কপালে জুটত দেড়শ টাকার কাপড়।

একইভাবে আইফোন থেকে শুরু করে যে মোবাইলই অর্ডার করুক না কেন, দেওয়া হতো ৪০০ টাকার চীনা মোবাইল ফোন। অনেক সময় আলু-পেঁয়াজ, এমনকি খালি বাক্সও সরবরাহ করত তারা। সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ডিসি মীর মোদাছ্ছের হোসেন বলেন, চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877