রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ অপরাহ্ন

সবার আগে ‘বিদায়’

স্পোর্টস ডেস্ক: ১ বলে দরকার ৪ রান! বাংলাদেশ আর হতাশার মধ্যে পার্থক্য এতটুকুই। প্রবল উত্তেজনায় ফুটছেন গ্যালারিতে লাল-সবুজের সমর্থকরা। এবার বুঝি মিলবে অধরা জয়ের দেখা। কিন্তু হলো না- বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে টানা তিন ম্যাচে জুটলো হার। লেখা হলো আরেকটি হতাশার গল্প। মাহমুদুল্লাহরা আলোর পানে ফিরতে ফিরতে হারালো অন্ধকারে। শেষ ওভারে  প্রয়োজন ছিল ১৩ রানের। তরুণ অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন তার প্রতিভা বিশ্বকাপে দেখাতে পারলেন না।

অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ ব্যাট হাতে অনেক জোর খাটালেন। কিন্তু বাস্তবতা অতি নিষ্ঠুর! জীবন পেয়েও টাইগার অধিনায়ক গুরুত্বপূর্ণ শেষ ওভারে একটি বলও ফেলতে পারলেন না বাউন্ডারির বাইরে। রাসেলের করা শেষ বলে তো ব্যাটই ছোঁয়াতে পারলেন না। চার-ছক্কার লড়াইয়ে মেনে নিতে হলো পরাজয়। ১৪৩ রান তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেট হাতে রেখেও হেরে গেল মাত্র ৩ রানে। অথচ বোলাররা ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং ঝড় থামিয়ে দারুণভাবে বেঁধে রাখে মাত্র ১৪২ রানে। এই হারে বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন গুঁড়িয়ে গেছে বাংলাদেশের। টানা তিন হারে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে অবস্থান বাংলাদেশ দলের। শেষ দুই ম্যাচ জিতলেও কোনো সম্ভাবনা নেই। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ দুটি ম্যাচ এখন আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। গতকালের ম্যাচে চোটের কারণে অনেকক্ষণ মাঠে ছিলেন না সাকিব আল হাসান। শোনা গেছে চোট পেয়েছেন হ্যামস্ট্রিংয়ে। যদিও পরে মাঠে নেমে বল ও ব্যাট করেছেন। তবে পরের দুই ম্যাচে তাকে পাওয়া যাবে কিনা সেটি জানা যাবে টেস্টের পরই।
জয়ের জন্য মরিয়া বাংলাদেশ। তাই রণ পরিকল্পনার শুরুতেই দেখা যায় পরিবর্তন। ক্যারিবীয়দের ১৪৩ রানের জবাব দিতে ব্যাট হাতে ওপেনিংয়ে চমক হয়ে নামেন সাকিব আল হাসান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৪০৩ ইনিংসে প্রথমবার ওপেন করলেন এই অলরাউন্ডার। তার সঙ্গী তরুণ ওপেনার নাঈম শেখ। এই বিশ্বকাপে দুই ফিফটি হাঁকানো এই তরুণ অবশ্য ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছিলেন ব্যর্থ। তবে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ম্যাচে তার দিকে তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আন্দ্রে রাসেলের লেন্থ বল পুল করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। বল যায় সোজা মিড উইকেট ফিল্ডার হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়রের কাছে। কিন্তু বদলি হিসেবে নামা ফিল্ডার ব্যর্থ হন বল হাতে জমাতে। ১১ রানে বেঁচে গেলেন নাঈম। অন্যদিকে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ওপেনার হিসেবে মিশন জমে ওঠেনি। আউট হন ১২ বলে ৯ রান করেই। আন্দ্রে রাসেলকে জায়গা বানিয়ে উড়িয়ে মারতে যান সাকিব। কিন্তু বল ওঠে আকাশে, মিড অফে সহজ ক্যাচ নেন জেসন হোল্ডার। বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ৪.৩ ওভারে ১ উইকেটে ২১।
আউট হওয়ার আগের বলেই আকিল হোসেনকে দুর্দান্ত এক শটে বাউন্ডারি মারেন সৌম্য সরকার। পরের বলটিতে সৌম্য আগেই স্টাম্প ছেড়ে জায়গা বানিয়ে দাঁড়ান। বাঁহাতি স্পিনার আকিল সেটি দেখেই একটু জোরের ওপর বল ছাড়েন স্টাম্প সোজা। সৌম্য ব্যাটের মুখ ঘুরিয়ে দেন একটু আগেই। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় শর্ট থার্ড ম্যানে। সামনে ডাইভ দিয়ে বল মুঠোয় জমান ক্রিস গেইল। ভাঙে ৩১ রানের জুটি। ১০.৪ ওভারে তখন টাইগারদের নেই ৩ উইকেট তবে স্কোর বোর্ডে যোগ হয়েছে ৬০। এরপর লিটনের সঙ্গে হাল ধরেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীম। কিন্তু এবার স্কুপ শট খেলার চেষ্টায় আউট হলেন। যদিও রামপলের ওভারের প্রথম বলে দারুণ এক কাট শটে চার মারেন মুশফিক। পরের বলে রান হয়নি। তৃতীয় বলে স্কুপ খেলার চেষ্টা করে আউট। তখন দলের প্রয়োজন ছিল ১৩.৩ ওভারে ৯০ এরইমধ্যে হারিয়েছে ৪ উইকেট।
এরপর দলের হাল ধরেন লিটনকে নিয়ে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। জেসন হোল্ডারের বলে লিটন সিঙ্গেল নিয়ে ১৫.১ ওভারে বাংলাদেশের রান স্পর্শ করে ১০০। ইনিংসের ১৮তম ওভারের শেষ বলে দলের  যখন প্রয়োজন ১৩ রান, ব্রাভোর বল ক্রিজের অনেক ভেতরে গিয়ে উড়িয়ে মারেন লিটন। লং অন সীমানায় প্রচণ্ড চাপের মধ্যে দু’হাত উঁচিয়ে বল তালুবন্দি করেন ক্যারিবীয় দীর্ঘদেহী অলরাউন্ডার জেসন হোল্ডার। লম্বা সময় উইকেটে থেকে ৪৩ বলে ৪৪ রান করে আউট হন লিটন। তাতেই ক্ষীণ হয়ে আসে টাইগারদের জয়ের আশা। শেষ পর্যন্ত দল হেরে যায় ৩ রানে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877