স্বদেশ ডেস্ক: বরগুনার বামনা উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষাার্থীকে ধর্ষনের অভিযোগ এনে বামনা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধর্ষণের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত মটরসাইকেল চালক প্রণব চন্দ্র বিশ্বাসকে (২০) পুলিশ গ্রেফতার করে বুধবার সকালে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে তিনজনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন ওই ধর্ষিতা শিক্ষার্থীর বাবা।
মঙ্গলবার দুপুরে উত্তর কাকচিড়া বাজার থেকে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে প্রণব চন্দ্র বিশ্বাস ও সোহেল হাওলাদার নামে এক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। তবে পুলিশের হাতে আটক ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর কথিত প্রেমিকা সোহেল হাওলাদার (১৬) মামলার আসামী না থাকায় তাকে রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। মামলার আসামীরা হলো-উত্তর গুদিঘাটা গ্রামের কুমেদ বিশ্বাসের ছেলে প্রণব বিশ্বাস, একই গ্রামের অবিনাশ চন্দ্র হাওলাদারের ছেলে অসীম হাওলাদার (১৯) ও দক্ষিণ কাকচিড়া গ্রামের স্বপন হাওলাদারের ছেলে মাসুদুল আলম অন্তর (১৯)।
জানা গেছে, মঙ্গলবার স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক গোপন সূত্রে ধর্ষণের সংবাদ পেয়ে প্রাথমিক অভিযুক্ত প্রণব চন্দ্র বিশ্বাসকে জিজ্ঞানাবাদ করেন। এক পর্যয়ে সে ধর্ষণের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। সাংবাদিকরা তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরি ও বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মাসুদুজ্জামানকে জানায়। তারা উভয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে এসে তার সাথে কথা বলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ও তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত ধর্ষক প্রণব চন্দ্র বিশ্বাসকে আটক করেন। ঘটনার সাথে আরো তিনজন জড়িত থাকার বিষয়ে অভিযুক্ত প্রণব জানায়। পরে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে ওই বিদ্যালয় থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোহেল হাওলাদার (১৯) নামে দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীকে আটক করে বামনা থানায় নিয়ে আসেন।
ধর্ষণের দায় স্বীকার করা প্রণব চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আটক হওয়া সোহেল হাওলাদারের সাথে মেয়েটির প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। সোহেলের সাথেই মেয়েটি গত সোমবার নদীর তীরে একটি জঙ্গলে যায়। আমি, অসীম ও অন্তর ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম। ঝোপের মধ্যে কিছু একটা ঘটছে দেখে আমরা সেখানে যাই। আমাদের দেখে মেয়েটির প্রেমিক সোহেল পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটিকে আমি ধর্ষণ করি। সে অজ্ঞান হয়ে পরলে সে অবস্থায় অসীম ও অন্তরও এই ধর্ষণ কার্যে অংশ নেয়।
তবে ধর্ষিতা ওই শিক্ষার্থী জানায়, প্রণব বিশ্বাস তাকে জোর করে ধর্ষণ করে। এসময় তার সাথে অসীম ও অন্তর নামে দুটো ছেলে ছিল। সে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আর কেউ তাকে ধর্ষণ কার্যে অংশগ্রহণ করেছিল কিনা তা সে বলতে পারেনি।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, আমার মেয়ের উপর যারা এই বর্বরতা চালিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তবে অহেতুক কেউ যেন দোষ না করেও শাস্তি পায়।
এ ব্যাপারে বামনা থানার অফিসার ইন চার্জ এসএম মাসুদুজ্জামান বলেন, সাংবাদিকদের সহযোগিতায় অভিযুক্ত ধর্ষক প্রণবকে তাৎক্ষনিক গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা তিনজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আজ সকালে গ্রেফতারকৃতকে বরগুনা আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছি। ভুক্তখোগী ওই শিক্ষার্থীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য তাকে বরগুনা সিভিল সার্জন এর কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে ঘটনার সাথে প্রাথমিক ভাবে জড়িত থাকার বিষয়টি সন্দেহ ও মামলার আসামী না হওয়ায় আটক সোহেল হাওলাদারকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।