রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২২ অপরাহ্ন

স্ট্রোক ও প্যারালাইসিস প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা

স্ট্রোক ও প্যারালাইসিস প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা

স্বদেশ ডেস্ক:

অনেকে স্ট্রোক বলতে হার্ট অ্যাটাক মনে করেন। আসলে স্ট্রোক হলো ব্রেনের অসুখ। মানুষের মৃত্যুর তৃতীয় কারণ এটি। প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ মানুষের মধ্যে ১৮০ থেকে ৩০০ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। স্ট্রোক তিন ধরনের- TIA, Progressing stroke এবং Complete stroke. TIA হলে রোগী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে recovery হয়। Progressing stroke-এ রোগীর অবস্থা ক্রমে অবনতি হতে থাকে। Complete stroke-এ রোগীর অবস্থা আগের মতো থাকে বা অবনতি হয় না। আবার স্ট্রোককে অন্যভাবে Classified করা যায়। একটি হলোথ রক্তনালি ব্লক হয়ে স্ট্রোক বা Intracerebral infarction. অন্যটা হলো ব্রেনের রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়া। ৮৫ শতাংশ মানুষের স্ট্রোক হয় রক্তনালি ব্লক হওয়ার কারণে এবং মাত্র ১৫ শতাংশের স্ট্রোক হয় রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে ব্রেনে রক্তক্ষরণের কারণে।

স্ট্রোকের কারণ : ischemic Stroke-এর কারণ রক্তে কোলেস্টেরল বা বেশি খারাপ চর্বির। Diabetes, sedentary worker এবং স্ট্রেসফুল Job। হার্টের অসুখ থেকেও Stroke হতে পারে।

ইৎধরহ-এ রক্তক্ষরণ : উচ্চ রক্তচাপের জন্য হয়ে থাকে। Ischemic Stroke প্রতিরোধ করতে হলে রক্তের চর্বি কমাতে হবে। এ জন্য ভাত কম খেতে হবে। বেশি খেতে হবে শাকসবজি, সালাদ। বয়স্কদের গরু বা খাসির মাংস বর্জন করতে হবে। প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট জোরে হাঁটতে হবে। বর্জন করতে হবে ধূমপান, মদ্যপান। Haemorrhagic Stroke প্রতিরোধ করতে নিয়মিত High Blood Pressure-এর ওষুধ খেতে হবে। এক বেলায়ও ওষুধ সেবন বাদ দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ পকেটে বা ব্যক্তিগত ব্যাগে কিংবা কর্মস্থলে রাখতে হবে।

স্ট্রোকের প্রধান উপসর্গ : স্ট্রোকের প্রধান উপসর্গ প্যারালাইসিস। সাধারণত একদিকের হাত-পা, কখনো কখনো মুখম-লের একাংশ প্যারালাইসিস হয়ে থাকে। স্ট্রোকের ধরন ও পরিমাণ অনুযায়ী প্যারালাইসিসের ধরন ও পরিমাণ নির্ভর করে। কারও আংশিক প্যারালাইসিস হয় আবার কেউ হাত বা পা একেবারেই নাড়াতে পারেন না। কারও হাত ও পায়ের অনুভূতি ঠিক থাকে, কারও থাকে না। যাদের ডান দিকের প্যারালাইসিস হয়, তাদের কথা বলতে কষ্ট হয় অথবা তারা কথা বলতেই পারেন না কিংবা বুঝতে পারেন না। এ ধরনের রোগীর ভালো হতে সময় লাগে বেশি। যাদের ইনফ্রাকশন ধরনের স্ট্রোক হয়, তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা কম থাকলেও ভালো হতে দীর্ঘ সময় লাগে। অনেক রোগী স্থায়ী পঙ্গুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকেন। হেমোরেজ বা রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোকের রোগীদের অবস্থা, লক্ষণ ও উপসর্গ নির্ভর করে ব্রেনের কোন অংশ কীভাবে কতটুকু ড্যামেজ হয়েছে- তার ওপর। অনেক ক্ষেত্রে রোগী অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে আসেন। রক্তচাপ বেশি থাকে। এমন রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। যারা প্রাথমিক ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেন, দ্বিতীয়বার রক্তক্ষরণের ঝুঁকি কম থাকে- তাদের হাত-পায়ের প্যারালাইসিস অপেক্ষাকৃত কম সময়ে ভালো হয়। স্থায়ী পঙ্গুত্বের আশঙ্কাও কম থাকে। যে ধরনের স্ট্রোকই হোক না কেন, ভালো বা মন্দ হওয়া নির্ভর করে প্রাথমিক মেডিক্যাল ও পুনর্বাসন চিকিৎসা কতটা দ্রত, কার্যকর ও সার্থকভাবে দেওয়া হয়েছে- তার ওপর। Stroke- এর পর প্যারালাইসিস হয়ে গেলে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া সবচেয়ে ভালো অথবা বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

লেখক : অধ্যাপক, নিউরোসার্জারি বিভাগ

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877