স্বদেশ ডেস্ক:
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তিন দিনের সফরে ওয়াশিংটনে রয়েছেন। গত সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন ইমরান। বৈঠকের দুই নেতা সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। আর সেই সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প যা বলেছেন, তাতে ভারতে তুমুল বিতর্ক দেখা দিয়েছে। শুধু ভারতেই নয়, আফগানিস্তান নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্যেও বির্তক দেখা দিয়েছে।
ট্রাম্প জানান ‘মোদি বলেছেন’, ভারত বলছে ‘না’ : ইমরানের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করার জন্য অনুরোধ করেছেন; কিন্তু গতকাল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, মোদি এ ধরনের কোন অনুরোধ জানাননি। এ নিয়ে গতকাল ভারতে তোলপাড় হয়। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদি) পরিষ্কার করুক।
ট্রাম্প দাবি করেন, দুই সপ্তাহ আগে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক বৈঠকে কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে কথা হয়েছে। ওই সময় মোদি তাকে সমস্যা সমধানের জন্য অনুরোধ করেন। ট্রাম্পের ভাষায়, প্রকৃতপক্ষে তিনি বলেন, ‘আপনি কি মধ্যস্থতাকারী বা মিমাংসাকারী হতে পারবেন?’ আমি বললাম, ‘কোন বিষয়ে?’ তিনি বললেন, ‘কাশ্মীর।’ ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে বহু বহু বছর ধরে এই সমস্যার এখন তারা (ভারত) সমাধান চায়। এখন আপনিও (ইমরান) যদি সমাধান দেখতে চান, তবে আমি সাহায্য করতে পারি। আনন্দের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারী হব। জবাবে ইমরান বলেন বলেন, ‘মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এই পরিস্থিতির সমাধান করতে পারলে শতকোটিরও বেশি মানুষের আশীর্বাদ পাবেন আপনি।’ কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, নরেন্দ্র মোদি এ ধরনের কোনো অনুরোধ ট্রাম্পকে করেননি।
‘চাইলে এক সপ্তাহেই আফগান যুদ্ধ জিততে পারি’ : আফগান যুদ্ধের ব্যাপারে ওই সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, আমরা চাইলেই এক সপ্তাহের মধ্যে আফগান যুদ্ধে জিততে পারি; কিন্তু এক কোটি মানুষকে হত্যা করতে চাই না বলে তা করছি না। এর জবাবে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি গতকাল মঙ্গলবার বলেন, সহজে যুদ্ধজয় ও ১০ মিলিয়ন লোক হত্যার ব্যাপারে ট্রাম্প ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছেন, বিষয়টি তার পরিষ্কার করা উচিত।
পাক-মার্কিন সম্পর্কের কী হলো : ইমরান খান মূলত মার্কিন মুলুকে গিয়েছিলেন পাক-মার্কিন সম্পর্ক মেরামত করতে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর পাকিস্তানের জন্য মোটা অঙ্কের আর্থিক সহায়তা প্রত্যাহার করেছে। সেই সময় পাকিস্তানকে ট্রাম্প মিথ্যাবাদী রাষ্ট্র হিসেবে আখ্যা দেন। আর ইমরানও এর পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন। কিন্তু গতকাল পুরনো তিক্ততা কিছু হলেও প্রশমিত হয়েছে। আন্তরিক আতিথেয়তার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান ইমরান। ইমরান বলেন, আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সব কিছুই করবেন। মূলত এই সহায়তাই চাইছিল যুক্তরাষ্ট্র। আর ট্রাম্প বলেন, আজ থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো।