স্বদেশ ডেস্ক:
সিলেট ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে অস্থিরতা ছড়িয়েছে এখন আওয়ামী লীগে। বিষয়টি গড়িয়েছে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত। ইতোমধ্যে শীর্ষনেতারা দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কাছে এ বিষয়ে বার্তা প্রেরণ করেছেন। প্রয়োজনে তারা দলীয় প্রধানের সাথে সাক্ষাৎও করতে পারেন বলে জানা গেছে। সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের বাইপাস করে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করায় নেতারা ক্ষুব্ধ।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, নবঘোষিত ছাত্রলীগের কমিটির কোনো কর্মকা-ের দায়িত্ব নেবেন না আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা। কারণ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের গুরুত্ব না দিয়ে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা। আর এ জন্য সিলেটে আওয়ামী লীগে এখন অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। মহানগর কমিটির পক্ষে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ) শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদ বিধান কুমার সাহা এবং জেলা কমিটির পক্ষে রয়েছেন এই ইউনিটের সাংগঠনিক সম্পাদক রণজিৎ সরকার। কমিটি নিয়ে ক্ষুব্ধ রয়েছেন, মহানগরের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, যুগ্ম সাধারণ আজাদুর রহমান আজাদসহ বড় একটি অংশ।
দলীয় সূত্র জানায়, ১২ অক্টোবর সোমবার সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করার পরপরই এক জরুরি বৈঠক করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগরের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, জেলার সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদসহ শীর্ষনেতারা। এই বৈঠক থেকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়; পরে নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে অস্থিরতার বার্তা পাঠান।
ঘোষিত কমিটিতে জেলার সভাপতির পদ পেয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রঞ্জিত সরকারের বলয়, মহানগরের সভাপতির পদ পেয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর বলয়, মহানগর সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বিধান কুমার সাহার বলয়।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, অতীত ইতিহাস ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা যখন ছাত্রলীগ করেছি অভিভাবক সংগঠনের মতামতেই অঙ্গসংগঠনের কমিটি হয়েছে। কিন্তু এবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আমাদের অবহিত না করে কমিটি দিয়েছে।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আমাদের সাথে আলোচনা করেননি। তারা বলেন, গণসংগঠনের কর্মী হিসেবে বিষয়টি তাদের অবগত করা উচিত ছিল। হঠাৎ করে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আলোচনা ছাড়া কমিটি দেওয়ায় সিলেটে এত বড় বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেইন বলেন, আমি গ্রুপ রাজনীতিতে বিশ^াসী নই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে আমার সাথে কেউ যোগাযোগ করেননি। তবে যাদের সিলেট ছাত্রলীগের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে তারা আমাকে ফুল দিতে এলে আমি ফুল গ্রহণ করেছি।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর সিলেটে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে। সাথে সাথে শীর্ষনেতারা এক বৈঠক করেন। ওই বৈঠক থেকে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করার জন্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তার মাধ্যমে বার্তা পাঠানো হয়। তিনি বলেন, অতীত রাজনীতির ইতিহাস ঘাঁটলে একটি কমিটিও সিলেটের দায়িত্বশীল নেতাদের না জানিয়ে ঘোষণা করা হয়নি। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতাদের সহযোগিতা নিয়ে কমিটির ঘোষণা দিলে বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না।