স্বদেশ ডেস্ক:
পদ্মা-সুরমা-গঙ্গা নদীতে ইলিশ পাওয়া যায়, এ কথা সবারই জানা। কিন্তু যদি শোনেন হাওরে এখন মিলছে ‘জাতীয় মাছ’, অবাক হবে তো? না সত্যই এখন হাওরে মিলছে ইলিশ। দেশের সর্ববৃহৎ জলাভূমি মৌলভীবাজার জেলার হাকালুকি হাওরের কুলাউড়া অংশে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে এই মাছ। তাই নামও দেওয়া হয়েছে ‘হাকালুকি ইলিশ’।
জানা গেছে, প্রতি বর্ষা মৌসুমে হাকালুকি হাওরে ছোট আকারের ৩-৪টি ইলিশ ধরা পড়ে। কিন্তু এবার জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বিশালাকায় ও বেশ সংখ্যক ইলিশ। এতে করে আনন্দ ঘুরে ফিরছে কুলাউড়ার জেলেদের ঘরে ঘরে। দেদারসে বিক্রিও হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে।
ইলিশ মূলত সমুদ্রের মাছ। তবে বাংলাদেশের পদ্মা-সুরমা ও ভারতের গঙ্গা (যমুনা অংশে) মেলে এই মাছ। সাধারণত ডিম পাড়ার সময় হলে নদীতে চলে আসে মা ইলিশ। আর নদীর সঙ্গে সংযোগ থাকায় বন্যার পানিতে ভেসে ইলিশ চলে এসেছে হাকালুকি হাওরে।
উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, অন্যান্য বছরে হাওরে হাতে গোনা ইলিশ পাওয়া গেলেও এবার পরিমাণে বেড়েছে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পাওয়া যাচ্ছে ইলিশ। বন্যার পানিতে ভেসে আসাতেই মূলত পরিমাণ বেড়েছে। স্থানীয়রা হাওরের নামের সঙ্গে মিলিয়ে এ মাছের নাম দিয়েছে হাকালুকি ইলিশ।
হাওরের আশেপাশের বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, মাঝারি ও ছোট আকারের ইলিশ বিক্রি করছেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা। ঘাটের বাজার, ভুয়াই বাজার, মিরের শংকর ও ভুকশিমইল বাজারগুলোতে জেলেরা এই ইলিশ বিক্রি করে যায়। পরে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দামে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করে থাকেন।
কুলাউড়া উপজেলার আছুরিঘাট এলাকায় এক জেলের সঙ্গে কথা হলে দৈনিক আমাদের সময়কে তিনি জানান, হাকালুকি হাওর থেকে তিনি প্রচুর ইলিশ ধরেছেন। এর আগেও ইলিশ ধরেছেন তিনি। তবে এবারে ইলিশের পরিমাণ বেড়েছে।
কুলাউড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ এ ব্যাপারে বলেন, ‘ডিমের মৌসুম হওয়ায় সাগর থেকে মেঘনা হয়ে সিলেটের কুশিয়ারা এবং সুরমা নদী দিয়ে এসেছে মাছগুলো। যেহেতু বন্যায় পানি বেড়েছে, তাই ভেসে চলে এসেছে।’ মিঠা পানিতে চলে আসায় এর স্বাদে ভিন্নতা আছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।