রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন

টিকার নিবন্ধনে গড়িমসি

স্বদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

স্বদেশ ডেস্ক:

করোনা সংক্রমণের কারণে বিশ^বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে প্রায় ১৯ মাস। টিকাগ্রহণ শেষে বিশ^বিদ্যালয় চালু হলে বন্ধের সময় বেড়ে যাবে। আপাতত টিকার নিবন্ধন সম্পন্ন করেই বিশ^বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা প্রশাসন। এ জন্য বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজ নিজ শিক্ষার্থীদের টিকার নিবন্ধন শেষ করার জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর সময় বেঁধে দেয়। তবে এ সময়ের মধ্যে নিবন্ধন সম্পন্ন হয়নি অধিকাংশ শিক্ষার্থীর। নিবন্ধনের জন্য প্রথমে শিক্ষার্থীদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) না থাকার জটিলতা ছিল। এর সমাধানের জন্য জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়েই বিশেষ পদ্ধতিতে টিকার নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে তৈরি ওয়েব লিঙ্কে এ নিবন্ধন করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এর পর এ তথ্য যুক্ত হবে সুরক্ষা অ্যাপে। দ্বিতীয় ধাপে শিক্ষার্থীরা সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবেন। কিন্তু গতকাল রবিবার পর্যন্ত ইউজিসির ওয়েব লিঙ্কের ডেটায় সংযুক্ত হয়নি সুরক্ষা অ্যাপ। অন্যদিকে ১৮

লাখের বেশি শিক্ষার্থী নিবন্ধন সম্পন্ন করেও টিকাগ্রহণের জন্য মোবাইলে মেসেজ পাননি। টিকার নিবন্ধনে চলছে গড়িমসি। অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে খুলতে পারে বিশ^বিদ্যালয়। এ ঝুঁকি এড়াতে শিক্ষার্থীদের দ্রুত ইউজিসির ওয়েব লিঙ্কে নিবন্ধন সম্পন্ন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ডেটা সুরক্ষা অ্যাপে যুক্ত করার জন্য ‘একসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই)’ সহযোগিতা চেয়েছে বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।

এ বিষয়ে গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় কমিশনের সদস্য প্রফেসর মুহাম্মদ আলমগীর আমাদের সময়কে বলেন, টিকার নিবন্ধন প্রায় শেষ

পর্যায়ে। আমরা ৩৪টি সরকারি বিশ^বিদ্যালয় এবং ৪২টি বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়ের তথ্য আমরা দিয়েছি। কালের মধ্যে বাকিগুলোর তথ্য পেয়ে যাব। এখন মূল দায়িত্ব হচ্ছে, যাদের এনআইডি ছিল নিবন্ধন করেছে তারাও টিকাগ্রহণের জন্য মোবাইলে মেসেজ পায়নি। আর যারা জন্মনিবন্ধন দিয়ে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করবে, সেই (ইউজিসির ওয়েব লিঙ্কের ডেটা) তথ্য সুরক্ষা অ্যাপে এখনো যুক্ত হয়নি। এ বিষয়ে এটুআইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে।

ইউজিসির তথ্যে জানা গেছে, বিশ^বিদ্যালয় স্তরে শিক্ষার্থী রয়েছে বর্তমানে ৪৩ লাখ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ ছাত্রছাত্রী এক ডোজ আর ১ লাখ ২২ হাজার উভয় ডোজ টিকা নিয়েছেন। আবার মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে সাড়ে ১৮ লাখ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থী ১ লাখ ৩২ হাজার। তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশই টিকা নিয়েছেন। এনআইডি না থাকা এবং ওয়েব লিঙ্কে নিবন্ধনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন রাজধানীর ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে আছে। ৪৩ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২ লাখেরই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেই। জš§নিবন্ধন সনদ (বিআরসি) নেই অন্তত ৩ লাখ।

টিকার নিবন্ধন সম্পন্ন না হলে ঝুঁকি থাকবে কিনা? এ বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, এটি ঠিক যে একটা ঝুঁকি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে এটিও ঠিক যে, শতভাগ ঝুঁকিমুক্ত অবস্থার জন্য আর অপেক্ষার সুযোগ নেই; সেটি সম্ভবও নয়। ১-২ শতাংশ ঝুঁকি থাকবেই। স্বাস্থ্যবিধি, টিকার রেজিস্ট্রেশন ও টিকা নিশ্চিতে প্রশাসনকেও কঠোর হতে হবে। কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে তাদের ক্যাম্পাস খুলতে হবে।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যেসব শিক্ষার্থী এনআইডি না থাকায় টিকার জন্য সুরক্ষা অ্যাপসে নিবন্ধন করেননি তারা ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নিবন্ধন করতে হবে। যাদের এনআইডি নেই তারা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়েই টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিন্তু ১৮ বছর বয়সের কম, সেও জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারবে। তবে এসব শিক্ষার্থী প্রথমে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ওয়েব লিঙ্কে নিবন্ধন করতে হবে। ইউজিসির নিবন্ধনের তথ্য সুরক্ষা অ্যাপে যুক্ত হবে, এর পর শিক্ষার্থীরা সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন চূড়ান্ত করতে পারবে। এসব শিক্ষর্থীর দ্রুত টিকা প্রদানের ব্যবস্থার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হবে টিকা প্রদান কেন্দ্র। এমনকি স্থানীয় টিকাদান কেন্দ্রেও তারা টিকাগ্রহণ করতে পারবে। যাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ নেই, তারা দ্রুত জন্মনিবন্ধন সনদ নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে।

টিকার নিবন্ধন সম্পন্ন করেই ২৭ সেপ্টেম্বরের পর বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজস্ব প্রস্তুতি নেওয়া সাপেক্ষ বিশ^বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যায়ে দেশের সব স্কুল, কলেজ, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ