স্বদেশ ডেস্ক:
বেশ কিছুদিন প্রেমের পর পালিয়ে বিয়ে করেন তারা। এর পর ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল থেকে ঢাকায় এসে সংসার শুরু করেন। কিন্তু কিছুতেই এ বিয়ে মেনে নিতে পারেনি তরুণীর পরিবার। তারা কৌশলে মেয়ে ও জামাইকে গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়ে নেয়। বাড়িতে যাওয়ার পর মেয়েকে ঘরে আটকে রাখেন। গত সোমবার স্ত্রীকে দেখতে গেলে ওই যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন তার শ্বশুর-শাশুড়ি ও চাচাশ্বশুর। খবর পেয়ে যুবকের ভাই ছুটে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। নির্যাতনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার শাশুড়িকে আটক করে পুলিশ। রাণীশংকৈলের বাঁচোর ইউনিয়নের ভাংবাড়ী গ্রামে ঘটে এ ঘটনা। নির্যাতনের শিকার নাসিরুল ইসলাম (২৬) ওই গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে। তিনি ও তার ভাই কুদ্দুস বর্তমানে দিনাজপুর আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাহিদ ইকবাল বলেন, গত সোমবার বিকালে ঘটনার খবর পেয়ে নাসিরুলকে সেখান থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফেসবুকে নির্যাতনের ভিডিও দেখে শুক্রবার ওই নারীকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলা হচ্ছে।
গতকাল সকালে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়রা জানান, নাসিরুলের সঙ্গে একই এলাকার করিমুলের মেয়ের প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। পরে তারা পরিবারের অগোচরে বিয়ে করে গত ৯ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁও নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ের হলফনামা গ্রহণ করেন। পরে তারা দুজনে ঢাকায় চলে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে ছেলে ও মেয়ের পরিবারের সম্মতিতে স্থানীয়ভাবে সমাধানের কথা বলে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে বলা হয়।
নাসিরুলের চাচা দবিরুল বলেন, আমি গিয়ে ভাতিজা ও বউমাকে ঢাকা থেকে নিয়ে আসি। কিন্তু রাণীশংকৈল নেকমরদ আসার পথেই মেয়ের আত্মীয়স্বজনরা তাকে জোর করে নামিয়ে নেয়। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের লক্ষ্যে অপেক্ষা করা হয়।
দবিরুল আরও জানান, ঘটনার দিন গত ২০ সেপ্টেম্বর নাসিরুল মেয়েটির বাড়ির পাশের একটি দোকানে তার এক বন্ধুকে নিয়ে চা খেতে যায়। এ সময় মেয়েটির মা সেলিনা বেগম, বাবা করিমুল ও চাচা রাব্বুল অতর্কিতভাবে নাসিরুলের ওপর হামলা করে। চা দোকানের খুঁটিতে হাত পা বেঁধে মারধর করা হয়।
স্থানীয় রুবেল নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, নাসিরুলকে দোকানে মারধরের পর ভাংবাড়ী স্কুলের একটি কাঁঠালগাছের সঙ্গে বেঁধে আবারও নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে ছেলের বড় ভাই কুদ্দুস গেলে তাকেও তারা মারধর করে। পরে ৯৯৯ নম্বরে কল দিলে পুলিশ গিয়ে নাসিরুলকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে মেয়েটির মা সেলিনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়েকে সে পালিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। পরে মেয়ে বাসায় এলে তাকে আমরা সরিয়ে দেই। ঘটনার দিন ছেলেটি আমাদের বাসার পাশ দিয়ে ঘুরঘুর করছিল। এ জন্যই তাকে মারধর করা হয়েছে।