স্বদেশ ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গণপিটুনিতে নিহত যুবকের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম সিরাজ (৩৪)। গতকাল শনিবার নিজের মেয়েকে দেখতে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হন তিনি। তবে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী হওয়ায় ঘটনার সময় কিছুই বলতে পারেননি সিরাজ।
এ বিষয়ে নিহত যুবকের ভাই আলম শনিবার রাতে দৈনিক আমাদের সময়কে জানান, ১০ বছর আগে সিরাজের সঙ্গে বিয়ে হয় শামসুন্নাহারের। বিয়ের পরে তাদের মিঞ্জু নামে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। পরে ২০১৫ সালে সিরাজ শামসুন্নাহারকে নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো এলাকার মোহন চান্দের বাড়িতে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। বেশ কিছুদিন তাদের সম্পর্ক ভালোই ছিল।
এখানেই শামসুন্নাহারের সঙ্গে পরিচয় হয় মান্নান নামের এক ব্যক্তির। এরপর পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আট মাস আগে শামসুন্নাহার সিরাজকে তালাক দিয়ে মান্নানকে বিয়ে করে। শামসুন্নাহার ৭ বছরের কন্যা মিঞ্জুকেও তার কাছে নিয়ে আসেন। এরপর থেকে প্রতিবন্ধী সিরাজ নিজের মেয়ে মিঞ্জুকে দেখতে প্রায়ই সিদ্ধিরগঞ্জের পাগলা বাড়ি এলাকায় আসতেন। শনিবারও নিজের মেয়েকে দেখতে আসেন সিরাজ। কিন্তু ছেলেধরা সন্দেহে তাকে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়।
সিরাজের এমন মৃত্যুতে তার ভাই শামসুন্নাহার ও মান্নানকে দায়ী করছেন। তিনি জানান, ‘সিরাজের সাবেক স্ত্রী ও তার বর্তমান স্বামী মান্নানই তাদের ভাইকে ছেলেধরার নাটক সাজিয়ে হত্যা করেছে। আমি তাদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি। ‘
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্র্মকর্তা (ওসি) মীর শাহিন শাহ পারভেজের সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তিনি ছুটিতে আছেন জানিয়ে বলেন, ‘এ বিষয়ে পরিদর্র্শক (তদন্ত) সেলিম অথবা উপপরিদর্শক শাখাওয়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ’ পরে পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম মিয়াকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উপ-পরিদর্শক সাখাওয়াতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ছেলেধরা সন্দেহে প্রতিবন্ধী যুবক সিরাজকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছে। এ ছাড়া নিহত যুবকের পরিবার থেকেও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেও একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখন নাম প্রকাশ করা যাবে না। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। ‘
প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার সকাল ৮টায় সিদ্ধিরগঞ্জের পাগলাবাড়ি এলাকায় গণপিটুনির শিকার হয় প্রতিবন্ধী সিরাজ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় সিরাজকে উদ্ধার করে। এরপর নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।