সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ১১:০১ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
গ্রাহকের টাকায় রাসেল দম্পতির আয়েশি জীবন

গ্রাহকের টাকায় রাসেল দম্পতির আয়েশি জীবন

স্বদেশ ডেস্ক:

প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া অর্থে আয়েশি জীবনযাপন করতেন ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন। মোহাম্মদ রাসেল নিজে চড়তেন সাড়ে তিন কোটি টাকা দামের রেঞ্জ রোভারে। তার স্ত্রী ব্যবহার করতেন আড়াই কোটি টাকা দামের বিলাসবহুল অডি গাড়ি। শুধু দামি গাড়ি নয়, আলিশান ফ্ল্যাটসহ আয়েশি জীবনযাপন করতেন। এ ছাড়া ফ্ল্যাট, প্লটসহ কিনেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ। মাত্র ৩৭ বছর বয়সী রাসেলের এমন শৌখিন জীবনের নেপথ্যে ছিল গ্রাহকের অর্থ।

এদিকে, ইভ্যালির এমডি মোহাম্মাদ রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে গত শনিবার দিবাগত রাতে ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন এক ভুক্তভোগী।

ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, কামরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। সেখানে ইভ্যালির সিইও এবং চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ইভ্যালির ধানমন্ডি কার্যালয়ে তিনি ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের পণ্য সরবরাহ করলেও ইভ্যালি তার পাওনা টাকা পরিশোধ করেনি।

অপরদিকে, গুলশান থানাপুলিশের রিমান্ডে থাকা মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে ইভ্যালির আর্থিক অনিয়ম নিয়েই বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। লোভনীয় নানা অফারের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক গ্রাহকের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর দিতে দিচ্ছেন না তারা। এ জন্য তাদের লেনদেনের সঠিক প্রমাণ বের করতে দুজনের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চাইবে পুলিশ।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্রাহকের টাকা কোথায় গেছে সেটি বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ। বিদেশে পাচার করা হয়েছে কিনা সেটি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। টাকা পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেলে রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করবে পুলিশ।

মামলার তদারক কর্মকর্তা ও গুলশান বিভাগের ডিসি মো. আসাদুজ্জামান আমাদের সময়কে বলেন, গ্রাহকের টাকা কোথায় গেছে বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্ব পাচ্ছে। এ ছাড়া তদন্তের প্রয়োজনে যা যা দরকার সবই করছি আমরা।

ইভ্যালির এমডি রাসেলকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাব জানায়, বিদেশি একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় অফারের আলোকে ইভ্যালির কার্যক্রম শুরু করেন রাসেল। বর্তমানে এর গ্রাহক সংখ্যা ৪৪ লাখের বেশি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইভ্যালির দায় ছিল ৪০৩ কোটি টাকা, যেখানে প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ কেবল ৬৫ কোটি টাকা। বিভিন্ন সংস্থায় প্রকাশিত বিপুল এই দেনার বিষয়ে র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে প্রতিষ্ঠানটির এমডি ও সিইও রাসেল কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি; বরং জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ দেনার পরিমাণ আরও বেশি, ‘প্রায় হাজার কোটি টাকা’ বলে জানিয়েছেন।

এর আগে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করা হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পরই র‌্যাব তাদের মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালায়। পরদিন বিকালে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আতিকুল ইসলামের আদালত রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877