স্বদেশ ডেস্ক:
ডা. মো. অহিদুজ্জামান কিডনি, মূত্রথলি ও নালি বিশেষজ্ঞ অনেক রোগী (বেশিরভাগই বয়স্ক) এসে অভিযোগ করেন, তারা প্রস্রাব আটকে রাখতে পারেন না। এমনকি সামান্য হাঁচি-কাশিতেও প্রস্রাব পড়ে যায়। এ সমস্যা যে কেবল পুরুষের হয়ে থাকে, ব্যাপারটা এমন নয়। নারীরাও একই সমস্যায় ভুগে থাকেন। এটি আসলে মূত্রাশয় বা মূত্রনালির অসুখের লক্ষণ। হঠাৎ মূত্রথলি সংকুচিত হতে শুরু করলে কিংবা যখন সংকুচিত হওয়ার কথা নয়, তখন মূত্রথলি প্রস্রাবে পূর্ণ হয়ে গেলে প্রবল চাপে প্রস্রাব বেরিয়ে আসে।
এ ছাড়া মূত্রথলি ঘিরে থাকা পেশি ঠিকমতো কাজ না করলেও প্রস্রাব বেরিয়ে আসতে পারে। মূত্রথলিতে প্রস্রাবের চাপ বাড়লে পেশি শিথিল থাকায় মূত্রথলি প্রস্রাব আটকে রাখতে পারে না। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ সমস্যা দেহের অন্য কোনো রোগের কারণেও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই রোগের চিকিৎসা করালে এ সমস্যাও সমাধান হয়ে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
কারণ : স্ট্রেস বা অতিরিক্ত চাপ। পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হলে এবং এই গ্রন্থির সার্জারির কারণে। কোনো রকম আঘাতের কারণে মূত্রথলির চারপাশের পেশি আঘাতপ্রাপ্ত হলে কিংবা কার্যক্ষমতা হারালে। নারীদের ক্ষেত্রে সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় কিংবা ওজন বাড়ার কারণে পেটের নিচের পেশিগুলো শিথিল হয়ে পড়লে, পেশিগুলো মূত্রথলি ঠিকমতো ধরে রাখতে না পারলে।
এ ছাড়া স্ট্রোক, প্রস্টেট বা মূত্রথলির ক্যানসার, পার্কিন্সন্স ডিজিজ, কোনো অসুখের কারণে মূত্রথলি ছোট হয়ে গেলে বা প্রস্টেট বড় হয়ে গেলে এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
রোগ নির্ণয় : মূত্রের পরীক্ষা, হরমোন পরীক্ষা, পুরুষের ক্ষেত্রে প্রস্টেট গ্রন্থির পরীক্ষা, এক্স-রে কেইউবি রিজন ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ নির্ণয় করা হয়।
চিকিৎসা : ওষুধ, ব্যায়াম এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সার্জারির মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব।
প্রতিরোধ : যত্রতত্র মূত্রত্যাগ থেকে বিরত থাকুন। ধূমপানকে না বলুন। অতিরিক্ত মদ্যপান, কফি পান থেকেও বিরত থাকুন। অনেকে বিশেষ করে মহিলারা প্রস্রাব আটকে রাখেন। এ ধরনের অভ্যাস থেকেও এ রোগ হতে পারে। তাই এ ধরনের অভ্যাস ত্যাগ করুন।
লেখক : কনসালট্যান্ট, ইউরোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চেম্বার : সেন্ট্রাল হসপিটাল, বাড়ি-২, রোড-৫, গ্রিনরোড, ধানমণ্ডি , ঢাকা ০১৭১১০৬৩০৯৩, ০১৯১১৭৬৫১৫০