স্বদেশ ডেস্ক:
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নদীসহ বদ্ধ পানিতে ফোটে বিভিন্ন রঙের শাপলা। তবে, লাল শাপলার (রক্ত কমল) প্রতি আকর্ষণ বেশি। লাল শাপলা ফুল দেখে মুগ্ধ হননি, এরকম মানুষ নেই। তবুও অযত্ন-অবহেলায় বিলুপ্তির পথে লাল শাপলা।
তবে, সাদা শাপলা হচ্ছে জনগণের আকর্ষণের প্রতীক। এটা বিশ্বাস করা হয় যে শাপলার সাদা রং আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে আর পাপড়িগুলোর মতো দেশের মানুষকে একত্রিত করে। তাই শাপলা ফুল অনেক রঙের হলেও কেবল সাদা শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল।
এলাকার বৃদ্ধরা জানান, ঠাকুরগাঁও সদরের নদী-পুকুরগুলো বৈশাখ মাসে পানিতে ভরে যেতে শুরু করে। এরপর তিন-চার সপ্তাহের মধ্যে এসব জলাশয় এক সময় ভরে যেত সবুজ পাতা ও লাল শাপলায়। দৃষ্টিনন্দন এসব দৃশ্য উপভোগ করতো সব বয়সের মানুষ। শিশুরা এ ফুল নিয়ে খেলনায় মেতে উঠতো। কিন্তু এখন তা বিরল।
ঠাকুরগাঁও সদরের টাঙ্গন ব্যারেজে সবচেয়ে বেশি শাপলা ফুল ফোটে। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, চোখের দৃষ্টি যতদূর, অতদূর শুধু শাপলা আর শাপলা। কিন্তু সবই সাদা শাপলা ফুল। একটিও লাল শাপলা দেখা যায়নি।
উপজেলার রুহিয়া ঘনিমহেষপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট আনসারুল নয়া দিগন্তকে জানান, বাংলা বর্ষের হিসাবে আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন-এই চার মাসে এলাকার জলাশয়ে শাপলা ফুল ফুটে। আগের মতো এখন লাল শাপলা ফুল দেখা যায় না।
তিনি বলেন, বর্ষার শুরুতে শাপলার জন্ম হলেও হেমন্তের শিশির ভেজা রোদমাখা সকালের জলাশয়ে চোখ পড়লে রং-বেরঙের শাপলার বাহারী রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যেত। এমন দৃশ্য চোখে না দেখলে বলে বোঝানো যাবে না।
স্থানীয়রা বলছে, আবাদি জমি ভরাট করে বাড়ি, পুকুর, মাছের ঘের বানানোর ফলে প্রাকৃতিকভাবে শাপলা জন্মানোর জায়গাও কমে আসছে। তাছাড়া জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের চাষাবাদের কারণে অধিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন, খাল-বিল ও জলাশয় ভরাটের কারণে এ উপজেলা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে লাল শাপলা।
এ বিষয় উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, সাধারণত শাপলা সাদা, হলুদ ও লাল তিন রংয়ের হয়ে থাকে। এর মধ্যে সাদা ফুল বিশিষ্ট শাপলা সবজি হিসেবে ও লাল রঙের শাপলা ওষুধি কাজে ব্যবহৃত হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণ রায় বলেন, শাপলা সবজি হিসেবে খেতে গ্রামের মানুষের বদ্ধজলাশয়ে চাষ করা দরকার। শাপলা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি সবজি।