মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৩২ অপরাহ্ন

কতটা ‘নতুন’ হলো তালেবান

স্বদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

স্বদেশ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রে আল কায়েদা জঙ্গিদের বিমান হামলার ২০ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। ওই হামলায় হাজার তিনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এর পর জঙ্গিদের নির্মূল করতে এবং তাদের আশকারা দেওয়ার অপরাধে তালেবানকে শায়েস্তা করতে আফগানিস্তানে ওই বছরই সামরিক আগ্রাসন শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বাহিনী। বিশ বছর পর, শেষে সেই তালেবানের কাছেই ‘পরাস্ত’ হয়ে তল্পিতল্পাসহ বাড়ি ফিরতে হয়েছে বিদেশি সেনাদের এবং দ্বিতীয় মেয়াদে তালেবান সরকার শপথ নেওয়ার জন্য এই ১১ সেপ্টেম্বরকেই বেছে নিয়েছে।

এর আগে ১৯৯৬ থেকে শুরু করে ২০০১ সালে আমেরিকার হাতে উৎখাতের আগ পর্যন্ত পাঁচ বছর আফগানিস্তান শাসন করে তালেবান। সেবার নারী নির্যাতন, মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনসহ নানাবিধ কট্টরবাদী শাসনবিধি চালু ও প্রয়োগ করেছিল তারা।

এবার কাবুল কব্জা করার পর তালেবান কথা দিয়েছিল- তারা আগের থেকে বদলে গেছে, নারীদের মর্যাদা রক্ষা করা হবে, গণমাধ্যমকে স্বাধীনতা দেওয়া হবে; কিন্তু মাত্র এক মাসের আগেই তাদের সব প্রতিশ্রুতি ভুয়া ও লোকভোলানো বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

তালেবান সবাইকে নিয়ে সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটি একেবারেই হয়নি। তালেবানের নেতৃত্বে পুরনো কাঠামো, এর নানা ধরনের কমিশন, ডেপুটি এবং সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আমির হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা- এদের সবাইকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে মন্ত্রিসভার কাঠামোর মধ্যে, যেমনটি অন্য দেশের সরকারের রাজনৈতিক কাঠামোতেও দেখা যায়।

পুরনো তালেবান সরকারের নৈতিকতা সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়টি পুনর্বহাল করা হয়েছে। নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয় বাদ দেওয়া হয়েছে। সরকারের সদস্যরা বেশিরভাগই পশতু জাতিগোষ্ঠীর সদস্য। মন্ত্রিসভায় রয়েছেন এক তাজিক এবং এক হাজারা; তারা দুজনই তালেবানের সদস্য। এক নারীকেও মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়নি। এমনকি কোনো নারী উপমন্ত্রীর মর্যাদায়ও নেই।

তালেবানের এই নতুন সরকার গঠন হয়েছে পুরনো তালেবান নেতা এবং নতুন প্রজন্মের মোল্লাহ ও সামরিক নেতাদের নিয়ে। ১৯৯০-এর দশকে যারা তালেবানের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারাই ফিরে এসেছেন। তাদের দাড়ির রঙ এখন সাদা, দাড়ির দৈর্ঘ্যও বেড়েছে। সরকারে রয়েছেন গুয়ানতানামো বে থেকে ফিরে আসা কিছু সদস্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের কালো তালিকাভুক্ত কয়েক সদস্যও রয়েছেন। কয়েক মাস ধরে তীব্র লড়াইয়ে যুক্ত ছিলেন এমন ক?য়েক অধিনায়ক, আর কিছু স্বঘোষিত শান্তি আলোচনাকারী, যারা নানা দেশে চক্কর দিয়ে সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, এটি তালেবানের নতুন সংস্করণ।

কিন্তু বিবিসির এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে যেমনটি দেখানো হয়েছে- তালেবান আসলে আগের মতোই আদর্শিক অবস্থানে রয়েছে। বস্তুত তারা এবারও কঠোর ও কট্টরবাদী শাসন কায়েম করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যেমন- এরইমধ্যে নারীদের নিয়ে গতকালও বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তালেবানের এক মুখপাত্র। টোলো নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাইদ জিকরুল্লাহ হাসিমি বলেছেন, ‘নারীরা মন্ত্রী হতে পারে না, তাদের উচিত সন্তান জন্ম দেওয়া।’ তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের নারী তারাই, যারা আফগানিস্তানের জন্য সন্তানের জন্ম দেবে, আর তাদের ইসলামি মূল্যবোধের শিক্ষায় শিক্ষিত করবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ