রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১২:১৯ পূর্বাহ্ন

ব্যাটিং ব্যর্থতায় অপেক্ষা বাড়লো

ব্যাটিং ব্যর্থতায় অপেক্ষা বাড়লো

স্পোর্টস ডেস্ক: সিরিজে ফিরতে মরিয়া কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম দ্বিতীয় ম্যাচে হার শেষে বলেছিলেন, ‘এই কন্ডিশনে পথ খুঁজে বের করতে চেষ্টা করছি আমরা।’ কিউইরা ঠিকই পথ খুঁজে বের করেছে। কিন্তু টাইগার-ব্যাটসম্যানরা যেন পথহারা। গতকাল জয় পেলেই সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যেত বাংলাদেশের। কিন্তু লেজেগোবরে ব্যাটিং দেখালো মাহমুদুল্লাহ বাহিনী, আর হার শেষে অপেক্ষা বাড়লো ভক্ত-সমর্থকদের।
সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের টার্গেট খুব বড় ছিল না। মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে মাহমুদুল্লাহরা ১২৮/৫-এ বেঁধে রাখে কিউইদের। জবাবে বাংলাদেশের শুরুটাও ছিল দুর্দান্ত। ইনিংসের শুরুতে দেখেশুনে ৪ ডটবল ছাড়েন ওপেনার নাঈম শেখ।

পরের তিন বলেই বাউন্ডারি। ইনিংসের শুরুর ১৬ বলে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে জমা পড়ে ২৩ রান। কিন্তু এর পরেই দিকভ্রান্ত হয় টাইগাররা। যেন নিজঘরে পরবাসী। নিজ মাটিতে উইকেটের চরিত্র বুঝে খেলতে যেন অনীহা। প্রথমে উইকেট বিলিয়ে দেন চমৎকারভাবে ব্যাটে খেলতে থাকা লিটন দাস। আবারো বাংলাদেশ থিঙ্ক ট্যাঙ্কের ভাবনাটা পরিষ্কার বোঝা গেল না। মনে হলো বিশাল রানের বোঝা টাইগারদের কাঁধে। ওয়ানডাউনে ক্রিজে পাঠালেন নবীন ক্রিকেটার শেখ মেহেদী হাসানকে। যা হবার হলোও তাই। ৪ বলে ১ রান করেন মেহেদী। দ্রুত উইকেট খুইয়ে সাজঘরে ফেরেন দলকে আরও চাপে ফেলে। সাকিব আল হাসানের খেয়ালি ব্যাটিং দেখে অভ্যস্ত ভক্ত-সমর্থকরা। আরও একবার খামখেয়ালি ব্যাটিং করলেন বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। নিজের প্রথম ডেলিভারিতে ডাউন দ্য উইকেটে এসে বল মিস করলেও বেঁচে যান সাকিব। কিন্তু পরের বলে আবারো বাজে শট। ‘ডাক’ মেরে সাজঘরে ফেরেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বাধিক রানের মালিক। দলীয় ২৩, ২৪ ও ২৫- এক এক রানের ব্যবধানে তিন উইকেট খোয়ায় বাংলাদেশ। ৩.৫তম ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৫/৩-এ। এরপর চিত্র হয়ে ওঠে আরও ভয়াবহ। দলীয় ৪২ রানে ষষ্ঠ উইকেট খোয়ায় বাংলাদেশ। সাজঘরে ফিরেছেন লিটন দাস, মেহেদী হাসান, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, নাঈম শেখ ও আফিফ হোসেন। ততক্ষণে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন সংগ্রহটা জানতে ভক্তদের তথ্য খোঁজাখুঁজি শুরু। সিরিজের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে তাদের সর্বনিম্ন রানে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ (৬০ রানে অলআউট)। গতকাল বাংলাদেশের ইনিংসের অর্ধেকটা দেখে মনে হচ্ছিল টাইগারদের ওই লজ্জা ফিরিয়ে দিচ্ছে নিউজিল্যান্ড। তবে ইনিংসের শেষ দিকে কিছুটা দৃঢ়তা দেখিয়ে লজ্জা এড়াতে সক্ষম হয় টাইগাররা। কিন্তু অলআউটের লজ্জা ঢাকতে পারেনি মাহমুদুল্লাহর দল। ইনিংসের ২ বল বাকি রেখে মাত্র ৭৬ রানে গুঁড়িয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। ৩৭ বল খেলে ২০ রানে অপরাজিত থাকেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীম। ১০ বলে ১৫ রান করেন লিটন। নাঈম শেখ করেন ১৩ রান। এক অঙ্কের রানে সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশের আট ব্যাটসম্যান। নিউজিল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল নেন ১৬ রানে চার উইকেট। ম্যাচসেরার পুরস্কারও ওঠে এজাজের হাতে। অফস্পিনার কোল ম্যাকনকির শিকার তিন উইকেট।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডটি নিউজিল্যান্ডেরই বিপক্ষে। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কলকাতায় কিউইদের বিপক্ষে ৭০ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ।
মিরপুরে এরআগে হার শেষে ল্যাথাম বলেছিলেন, ‘যা হয়েছে আশা করি এখান থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবো আমরা। আমাদের জন্য ব্যাপারটি হলো, এই কন্ডিশনে পথ খুঁজে বের করা। দেশের চেয়ে এখানে সবকিছু পুরো আলাদা। দেশে যে পথ বেছে নেই আমরা, সেটির চেয়ে পুরো ভিন্ন কিছু খুঁজতে হবে। আমি নিশ্চিত, ছেলেরা এখান থেকে অনেক শিখবে।’
গতকাল টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম ল্যাথাম। শুরুটাও ভালো ছিল তাদের। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ ৪০। তবে এরপরই স্বরূপে ফেরে টাইগার বোলাররা। নিজের প্রথম ওভারে মেডেন-উইকেটসহ প্রথম আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর রহমান। টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপক্ষে দলীয় ৬২ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। কিন্তু এরপরই ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। ষষ্ঠ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৬৬ রানের জুটি গড়েন নিকোলস ও ব্লান্ডেল।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877