শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ০২:০৮ পূর্বাহ্ন

নাটোরে মা-মেয়ের এইচএসসি পাস……….!

স্বদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২০ জুলাই, ২০১৯

স্বদেশ ডেস্ক: লেখাপড়া করার অদম্য ইচ্ছা থাকার পরও এসএসসি পরীক্ষার আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিল মাসুমা খাতুনকে। ১৯৯৭ সালে তিনি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু পরীক্ষার আগেই পরিবার থেকে তাকে বিয়ে দেয়া হয়। এরপর আর পরীক্ষা দিতে পারেননি মাসুমা। অবশেষে তিনি নতুন করে শুরু করেন লেখাপড়া।
নাটোরের বাগাতিপাড়ার মাসুমা খাতুন বাগাতিপাড়া পৌর মহিলা বিএম কলেজের সেক্রেটারিয়েল সায়েন্স ট্রেডের ছাত্রী ছিলেন। এর আগে তিনি নিজের মেয়ের সঙ্গে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০১৭ সালে মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পাস করেন। চলতি বছর নিজের মেয়ের সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তিনি চলতি বছর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পেয়েছেন জিপিএ-৪১৩। আর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। একসঙ্গে পাস করার খবর শুনেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন তারা। ভালো ফল করায় তাদের বাহবা দেন সহপাঠী ও কলেজের শিক্ষকরা। মাসুমা খাতুনের বাবার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার বারইপাড়া গ্রামে। বিয়ে হয় বাগাতিপাড়া উপজেলা সদরে। স্বামী আব্দুল মজিদ আনসার ব্যাটালিয়নে সিপাহি (প্রশিক্ষক) পদে চাকরি করেন। তার কর্মস্থল গাজীপুরে। তাদের দুই সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে বনি আমিন বাগাতিপাড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজের ¯œাতক শ্রেণির ছাত্র।
মাসুমা খাতুন জানান, ‘বিয়ের ২০ বছর পেরিয়ে গেছে। পরপর দুই ছেলেমেয়েকে মানুষ করতে গিয়ে নিজের পড়ার কথা ভাবারই সময় পাইনি। অবশেষে ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নতুন করে পড়ালেখা শুরু করেছি। সমাজের আর দশটা মানুষের মতো নিজেকেও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যাতে পরিচয় দিতে পারি, সে কারণেই এই বয়সে কষ্ট করে লেখাপড়া করছি।’ এ ব্যাপারে মাসুমা খাতুনের স্বামী আব্দুল মজিদ জানান, তার জন্য একটু কষ্ট হলেও স্ত্রীর ইচ্ছার মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি যত দূর পড়াশোনা করতে পারেন, সে জন্য চেষ্টা করা হবে। লেখাপড়া করার এক অদম্য ইচ্ছা কুরে কুরে খেয়েছে মাসুমা খাতুনকে। সেই ইচ্ছা বুকের ভেতর চাপা রেখেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তিনি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

এ জাতীয় আরো সংবাদ