স্বদেশ ডেস্ক: প্রথমে প্রেম। সেই সূত্র ধরে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে। অতঃপর বিচ্ছেদ। এত ঘটনা, এক পর্ব অথচ এর কিছুই জানেন না কনে! এমনই এক ঘটনা ঘটেছে নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার পোড়াদিয়া গ্রামে। স্বাক্ষর জাল করে বিয়ে ও তালাকনামা তৈরির মাধ্যমে সমাজে হেয়পতিপন্ন করার অভিযোগ এনেছেন ওই গ্রামের এক কলেজছাত্রী।
এ ঘটনায় কথিত স্বামী ও তার সহযোগীসহ চারজনের বিরুদ্ধে নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন তিনি। বেলাবো থানার ওসিকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
মামলার আসামিরা হলেন-পোড়াদিয়া গ্রামের আইয়ুব খানের ছেলে ও কথিত স্বামী খাইরুল আলম সাব্বির, একই উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত করম আলীর ছেলে কাশেম, জাহিদুর রহমান ও মোমেন। আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, পোড়াদিয়া পলিটেকনিক্যাল কলেজের ওই ছাত্রীর বাড়ির বিদ্যুৎ বিল আবাসিকের জায়গায় বাণিজ্যিক হারে আসে।
বিষয়টি নিয়ে কলেজছাত্রীর বাবা স্থানীয় সাব্বিরের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি বিলটি সংশোধন করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেন। ওই সময় বিল সংশোধনের জন্য সাদা কাগজে একটি আবেদনপত্র, কলেজছাত্রী ও তার বাবার দুই কপি করে ছবি নেন। এর কিছু দিন পর সাব্বির কলেজছাত্রীর স্বাক্ষর জাল করে নরসিংদী নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে গিয়ে ‘বিয়ে’ করেন। অথচ ওই সময় কলেজছাত্রী নোটারি পাবলিকের কাছে যাননি। এমনকি বিয়ের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেননি।
পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী বেলাবো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। তিনি বিষয়টি সহকারী ভূমি কমিশনারকে দায়িত্ব দেন। পরে স্থানীয়রা সালিশ বসান। কিন্তু কোনো ফল পাওয়া যায়নি। তাই নিরুপায় হয়ে গত মঙ্গলবার নরসিংদী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন কলেজছাত্রী।
গতকাল বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে পারেন। কলেজছাত্রী বলেন, অভিনব কায়দায় সাব্বির আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমার মানসম্মান ক্ষুণ্ন করেছে। বিদ্যুৎ বিল সংশোধনের কথা বলে, সে আমার ও বাবার ছবি নিয়েছে। তার পর আমার স্বাক্ষর জাল করে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেছে। সে আবার স্বাক্ষর জাল করে বিয়েবিচ্ছেদও করেছে। কিন্তু আমি কিছুই জানি না। আমি সেখানে যাইনি। স্বাক্ষরও দিইনি। আমার প্রশ্ন হলো- আমার অনুপস্থিতিতে আইনজীবীরা এই অন্যায় কাজটি সহায়তা করলেন কীভাবে? আমি এর বিচার চাই।
এদিকে স্বাক্ষর জাল করে বিয়ে করার অভিযোগ অস্বীকার করে খাইরুল আলম সাব্বির বলেন, ওর সঙ্গে আমার চলাফেরা ছিল। ভালোবাসা ছিল। আমরা নোটারি পাবলিকের কাছে গিয়ে বিয়েও করি। পরে সে অন্য কারও প্ররোচনায় আমাকে ডিভোর্স দেয়। আমার বিরুদ্ধে উপজেলা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছিল। ইউএনও আমাকে ডেকেছিলেন। পরে আমি সব কিছুই খুলে বলেছি। তারপর আবার আদালতে মামলা করেছে।