রিফাত শরীফের সঙ্গে বিয়ের পরও নয়ন বন্ডের সঙ্গে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির অনৈতিক সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ। বরগুনা থানার পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নি আগে নয়ন বন্ডের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল। এ বিয়ের কথা গোপন রেখে এবং তাকে তালাক না দিয়েই রিফাতকে বিয়ে করেন মিন্নি। বিয়ের পরও তিনি প্রথম স্বামী নয়ন বন্ডের সঙ্গে যোগাযোগ ও অনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখেন।’
আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন হুমায়ুন। তিনি আরও বলেন, ‘রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের আগে এবং পরে মিন্নির সাথে আসামিদের ফোনালাপ ও ম্যাসেজ আদান প্রদান হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার পূর্বে রিফাত শরীফ কলেজ এলাকা ত্যাগ করতে চাইলেও মিন্নি কৌশলে তাকে যেতে দেয়নি এবং রিফাতকে যখন সন্ত্রাসীরা ধরে নিয়ে যাচ্ছিল তখন তিনি নির্লিপ্ত থেকে তাদের পেছনে পেছনে হেঁটেছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, মিন্নি রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এ কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
রিফাত হত্যাকাণ্ডের তদন্তে থাকা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে মিন্নি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় অন্যান্য আসামিকেও মুখোমুখি করা হবে।’
এদিকে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেনও রিফাত হত্যার মিন্নির জড়িত থাকার বিষয়টি সংবাদ সম্মেলনে জানান। হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় মিন্নি জড়িত ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রিমান্ডে থাকা আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। সে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।’
আজ বৃহস্পতিবার রিফাত হত্যার তিন নম্বর আসামি রিশান ফরাজিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনিসহ এ ঘটনার মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
এ হত্যাকাণ্ডে ৮জন জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিকেলে এই মামলার আরেক আসামি আরিয়ার শ্রাবণ আদালতে হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এর আগে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই (মঙ্গলবার) ভোরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেয় পুলিশ। তার আগে পরিবারসহ তাকে হেফাজতে নেয় বরগুনা পুলিশ। গতকাল বুধবার তাকে আদালতে তোলা হয়। পরে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে আহত করে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা সাতজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
উল্লেখ্য, এই মামলার আরেক আসামি রিফাত ফরাজিকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।