স্বদেশ ডেস্ক: ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা শেষই হচ্ছে না। কমিটি গঠনে সাবেক ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে গঠিত সার্চ কমিটি ও স্থায়ী কমিটির নেতাদের দায়িত্ব দেয়ার পরও কাটছে না জটিলতা। কাউন্সিলের মাধ্যমে ভোটারদের প্রত্যক্ষ ভোটে অপেক্ষাকৃত তরুণ ছাত্রনেতা নির্বাচিত করতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছেন না কেউই। বরং যাদের দায়িত্ব দিয়েছিলেন সেই দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্চ কমিটি কাউন্সিলের তফসিল ঘোষণা করার পরও তা স্থগিত করেছেন। ছাত্রদলের বিগত কমিটির একটি পক্ষের বিরোধিতার মুখে একটি মনোনয়ন ফরমও বিক্রি করেনি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। সঙ্কট সমাধানে স্থায়ী কমিটির দু’জন নেতাকে দায়িত্ব দেয়া হলেও এখনো সুরাহা হয়নি। উল্টো ওই দু’জনসহ বিএনপির তিন নেতা সরে দাঁড়িয়েছেন। এতে স্থগিত হয়ে আছে কাউন্সিলের কার্যক্রম ও বিক্ষুব্ধদের দাবি করা আহ্বায়ক কমিটিও। যদিও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। কিন্তু সঙ্কট সমাধানের দ্বারপ্রান্তে গিয়েও অজ্ঞাত কারণে ঝুলে আছে সব। এখন সবাই তাকিয়ে আছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দিকে। এ দিকে আহ্বায়ক কমিটির দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা দাবি আদায়ে ফের আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ছাত্রদলকে অপেক্ষাকৃত তরুণ ও ছাত্রদের হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে চায় তারেক রহমান। এর প্রাথমিক উদ্যোগ হিসেবে এবার ছাত্রদলের কমিটি গঠনে একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমা বেঁধে দেয়া হয়, যা পরে আরো কমিয়ে নিয়মিতদের হাতে দেয়ার ইচ্ছাপোষণ করেছেন তিনি। এ জন্য ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয় বিএনপি। গত ৩ জুন আগের কমিটি বিলুপ্ত করে ৪৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয় দলটি। তবে কাউন্সিলের ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে ছাত্র সংগঠনটিতে। নতুন কমিটি গঠনে ২০০০ সাল কিংবা তার পরবর্তী সময়ে এসএসসি/সমমান উত্তীর্ণ বয়সসীমা নির্ধারণ করে দেয়ায় বাদ পড়ছেন এতদিন সক্রিয় থাকা বড় একটি অংশ। এরপর থেকেই দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছেন তারা। বয়সসীমা বাতিল করে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেশ কয়েকটি বিক্ষোভ ও বিএনপির সিনিয়র নেতাদের লাঞ্ছিতও করেছেন তারা। এ কারণে আন্দোলনকারী ১২ জন ছাত্রনেতাকে বহিষ্কারও করা হয়। অন্য দিকে কাউন্সিল আয়োজনের জন্য ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের সমন্বয়ে তিনটি কমিটি করে দেয়া হয়। এই কমিটি গত ১৫ জুলাই ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে তফসিলও ঘোষণা করে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের হুমকি-ধামকির মুখে একটি মনোনয়ন ফরমও বিক্রি করতে পারেনি। সঙ্কটের অজুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয় কাউন্সিলের কার্যক্রম।
সার্চ কমিটির অন্যতম নেতা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, ক্ষুব্ধ নেতাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা, আগামী দিনে দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনেসহ বিভিন্ন পর্যায়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। কারণ বিক্ষুব্ধরা আমাদের ছোট ভাই। তাদের দলে অনেক ত্যাগ রয়েছে, মামলা-হামলায় তারা জর্জরিত, জেল খেটেছেন। তাদের বিষয়টিও আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। তাদেরকে নিয়ে আমরা সব কিছু করব। তিনি জানান, ক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই ছাত্রদলের কাউন্সিলের নতুন তারিখ ঠিক করা হবে।