স্বদেশ ডেস্ক:
এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি ক্যালিফোর্নিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চলা ভয়াবহ দাবানল। অন্যদিকে প্রচণ্ড দাবদাহ ও দীর্ঘ খরার কারণে সৃষ্ট দাবানলে কয়েক দিন ধরে পুড়ছে গ্রিস। এরই মধ্যে দেশটির ছয় অঞ্চলে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। সেখানে এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের উপকণ্ঠেও পৌঁছে গেছে দাবানল। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে বাসিন্দারা। কাছেই আগুনে জ্বলছে এভিয়া দ্বীপও। দ্বীপের বাসিন্দা ও বিদেশি পর্যটকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
গতকাল রোববারও মাছ ধরা নৌকা ও ফেরিতে করে দ্বীপ ছেড়েছেন অনেকে। নিয়ন্ত্রণহীন দাবানল গ্রাস করে নিচ্ছে একের পর এক এলাকা। অতি তাপমাত্রায় সৃষ্ট দাবানলের কারণে ছয়টি অঞ্চলে সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। পুড়ে গেছে পাইন বনের বহু গাছপালা ।
গ্রিসজুড়ে ১৫৪টি দাবানল নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছেন হাজারো দমকলকর্মী। দাবানল নিয়ন্ত্রণে ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ বাড়িয়ে দিয়েছে সাহায্যের হাত। দেশগুলো থেকে পাঠানো হচ্ছে আরও দমকলকর্মী ও উড়োজাহাজ।
এদিকে, আগুনে পুড়ে মারা গেছেন দমকলকর্মীসহ দুজন। এ পর্যন্ত দগ্ধ হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। দাবানল থামাতে গিয়ে একটি ফায়ার ফাইটিং বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে, অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন প্লেনের কর্মীরা।
অন্যদিকে, গত কয়েক দিনের ভয়াবহ দাবানলে পুড়ে ছাই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের উত্তরাঞ্চল। প্রদেশটির গ্রিনভিল ও সিয়েরা নেভাডা এলাকায় আটজনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয় নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। আগুন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নিখোঁজ ব্যক্তিদের অনুসন্ধানে অভিযান অব্যাহত আছে।
১২ দিনেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের দাবানল। পর্যটন নগরী মারমারিস ও বোদ্রাম এক প্রকার ধ্বংস হয়ে গেলেও এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন।
পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে আনা অত্যাধুনিক সব অগ্নিনির্বাপক বিমান ও হেলিকপ্টারের সহায়তায় আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানো হলেও প্রতিনিয়তই নতুন নতুন অঞ্চলে তৈরি হচ্ছে দাবানল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০০৩ সালের পর চলতি বছরের মাঝামাঝি পর্যন্ত এমন দাবানল বিশ্ব আর দেখেনি। তীব্র দাবদাহ ও দীর্ঘ খরার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দাবানল সৃষ্টি হয়েছে। এতে বনাঞ্চল ও তৃণভূমি পুড়ে যাওয়ায় বায়ুমণ্ডলে ৩৪৩ মেগাটন কার্বন নিঃসরণ হয়েছে, যা পরিবেশের সুরক্ষায় বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।