স্বদেশ ডেস্ক: ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণ যখন বৃদ্ধি পাচ্ছে তখন ভুলপথে ছুটছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সতর্কতা দিয়ে দেশটির শীর্ষ সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রধান মেডিকেল উপদেষ্টা ড. অ্যান্থনি ফাউচি বলেছেন, যেসব এলাকায় এখনও টিকা দেয়া হয়নি অথবা টিকা দেয়ার হার কম, সেখানেই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়ছে। এই ধারা রুখতে যেসব মার্কিনি টিকা নিয়েছেন তাদের জন্য মাস্ক পরার নির্দেশনা পুনর্বিবেচনা করছেন স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
অ্যান্থনি ফাউচি বলেছেন, ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের জন্য বুস্টার ডোজ দেয়ার বিষয়টিও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, যেসব স্থানে টিকা দেয়ার হার কম, সেখানকার স্থানীয় নেতাদের উচিত জনগণকে টিকা নিতে উৎসাহিত করা। আরকানসান এবং ফ্লোরিডায় রিপাবলিকান গভর্নরদের প্রতি তিনি বিনীতভাবে টিকা দেয়াকে প্রমোট করার আহ্বান জানিয়েছেন। এখানে উল্লেখ, ওই দুই রাজ্যের গভর্নরই এর আগে ড. ফাউচির পরামর্শের সমালোচনা করেছিলেন। ড. অ্যান্থনি ফাউচি বর্তমান ডেমোক্রেট দল থেকে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেনের যেমন প্রধান উপদেষ্টা, ঠিক একইভাবে তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান ডনাল্ড ট্রাম্পেরও উপদেষ্টা ছিলেন।
সরকারি হিসাব বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে কমপক্ষে ১৬ কোটি ২৭ লাখ মানুষকে পূর্ণাঙ্গ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এই সংখ্যা মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪৯ ভাগ। টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে এপ্রিল পর্যন্ত সবার চেয়ে এগিয়ে ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এরপর টিকা দেয়ার হার কমতে থাকে। টিকা নেয়ার হার বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে কম। এসব রাজ্যের অনেক এলাকায় অধিবাসীদের অর্ধেকেরও কম প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। ওদিকে মে ও জুনে আক্রান্তের সংখ্যা কমে গেলেও আবার প্রতিদিন সংক্রমিতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে আক্রান্তের সংখ্যা যোগ হয়েছে ৩ কোটি ৪০ লাখের সঙ্গে। মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১০ হাজার মানুষের। উচ্চ মাত্রায় বিস্তারের ক্ষমতা সম্পন্ন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে আবার এই ধারা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সবচেয়ে দ্রুত আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ওইসব রাজ্যে যেখানে টিকা দেয়ার হার খুব কম। এমন রাজ্যের মধ্যে আছে ফ্লোরিডা, টেক্সাস ও মিসৌরি। এ সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেল বিবেক মূর্তি বলেছেন, নতুন করে যেসব মানুষ মারা যাচ্ছেন, তার মধ্যে শতকরা ৯৯.৫ ভাগই টিকা নেননি।
ড. অ্যান্থনি ফাউচি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) মাস্ক পরা নিয়ে যে নির্দেশনা দিয়েছে তা পরিবর্তন করা নিয়ে আলোচনার সঙ্গে তিনি যুক্ত। সিডিসি তার নির্দেশনায় বলেছে, যেসব মানুষ পুরোপুরি টিকা নিয়েছেন, তারা মাস্ক ছাড়াই মহামারির আগের অবস্থায় কর্মকা- শুরু করতে পারেন। কিন্তু এই নির্দেশনার অধীনে স্থানীয় সরকারগুলো তাদের নিজস্ব নিয়ম চালু করতে পারেন বলে জানিয়েছেন ড. ফাউচি। তিনি বলেন, কিছু স্থানীয় সরকার সংক্রমণ রোধের জন্য ঘরের মধ্যে এবং প্রকাশ্যে মাস্ক পরার বিষয়ে নতুন করে বিধিনিষেধ দিয়েছে। লস অ্যানজেলেস কাউন্টিতে টিকা নিয়েছেন বা নেন নি উভয় শ্রেণির মানুষের জন্য ঘরের ভিতর মাস্ক পরতে বলা হয়েছে।