স্বদেশ ডেস্ক: নোভাক জকোভিচ জানিয়েছেন উইম্বলডনের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে রজার ফেদেরারের বিরুদ্ধে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার মহাকাব্যিক লড়াইয়ে জিততে তাকে মানসিক চাপকেও জয় করতে হয়েছিল। অপর দিকে শিরোপার এত কাছে এসেও ফিরে যেতে বাধ্য হওয়ায় ‘বুড়ো’ ফেদেরারের কণ্ঠে ঝরে পড়ল একগাদা আক্ষেপ। লিন্ডনের একপাশে গত ১৪ জুলাই বিকেলে যখন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনাল নিয়ে আলোড়ন চলছিল, সেইসময় শহরের দক্ষিণপাশে বসেছিল গ্র্যান্ডসø্যাম টেনিসের পসরা। অল ইংল্যান্ড ক্লাবের সেন্টার কোর্টে টানা দ্বিতীয় শিরোপার সন্ধানে থাকা ৩৩ বছরের জকোভিচ প্রথম ও তৃতীয় সেট টাই ব্রেকে ৭-৬ গেমে জেতেন। অপর দিকে দ্বিতীয় ও চতুর্থ সেটে ৩৭ বছর বয়সি ফেদেরার প্রতিপক্ষকে সুযোগ না দিয়েই ৬-১ ও ৬-৪ গেমে জিতলে খেলা গড়ায় পঞ্চম সেটে। প্রায় দেড় ঘণ্টা দীর্ঘ এই সেটে বেশ নাটকীয়তা শেষে জকোভিচ ১৩-১২ গেমে জিতলে টানা শিরোপা রক্ষা ও শেষ পাঁচ গ্র্যান্ডসø্যামে চতুর্থ শিরোপা নিশ্চিত হয় তার।
জিকোভিচ বছর সাতেক আগে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে পাঁচ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট দীর্ঘ এক ম্যাচে রাফায়েল নাদালকে হারিয়েছিলেন। তবে ফেদেরারের বিপক্ষে গত ১৪ জুলাইয়ের ম্যাচটিকে অন্যভাবে এগিয়ে রাখছেন। জকোভিচের চোখে এই ফাইনাল মানসিকভাবে সবচেয়ে বেশি শক্তি শুষে নেওয়া এক লড়াই ছিল।
বিশ্বসেরা টেনিস তারকাটির ভাষায়, ‘এটা সম্ভবত আমার খেলা সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপের ম্যাচ ছিল। নাদালের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ফাইনালে আমি শারীরিকভাবে সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন ম্যাচটি খেলেছিলাম, যা প্রায় ছয় ঘণ্টায় গড়িয়েছিল। কিন্তু মানসিকভাবে সবকিছুর জন্যই এই ম্যাচটা ভিন্ন উচ্চতায় ছিল।’ তিনি আরো বলেন, ‘জয়ী হিসেবে এখানে আপনাদের সামনে আসতে পেরে আমি শিহরিত এবং কিছুটা আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েছি। হার থেকে কেবল একটা শট দূরে ছিলাম আমি এই ম্যাচে সবকিছুই ছিল। ম্যাচটা তার পক্ষেও যেতে পারত।’
ফেদেরার পুরো ম্যাচে ‘এইস’ পেয়েছিলেন ২৫টি, অন্য দিকে জকোভিচ ১০টি। শেষ সেটে যখন ৮-৭ ব্যবধানে এগিয়ে ফেদেরার, তখন নিজের সার্ভে দুটো চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্ট পেয়েছিলেন তিনি। এই অবস্থায় একটি ‘এইস’ই সুইস এই খেলোয়াড়কে ২১তম গ্র্যান্ডসø্যাম জিতিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু দুটো চ্যাম্পিয়নশিপ পয়েন্টের একটিও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হওয়ার মাসুল দিতে হলো শিরোপা খুইয়ে।
সুইস খেলোয়াড়টির কণ্ঠে তাই বেশ আফসোসই ঝরে পড়ে, ‘আমি জানি না সরাসরি সেটে হারলে এর চেয়ে ভালো হতো কি না, কিন্তু দিনশেষে এর কোনো মানে নেই। নিজের ওপর রাগান্বিত হওয়ার চেয়ে তখন আপনার হতাশা পেয়ে বসতে পারে, দুঃখ হতে পারে। আমি জানি না এখন আমার কেমন অনুভূতি হচ্ছে। আমার কেবলই মনে হচ্ছে দারুণ একটা সুযোগ হারালাম। আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না’।