স্বদেশ ডেস্ক: গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অনেক এলাকার অফিস-আদালতে পানি ঢোকায় বন্ধ রয়েছে। কুড়িগ্রামে ৪ শিশু ও দুই যুবকসহ ৬ জন বন্যার পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অনেকে গরু-ছাগল নিয়ে বাঁধের ওপর বা উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যাদুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের মানবেতর দিন কাটছে। বিভিন্ন এলাকায় খাবার পানির উৎস ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে কয়েক হাজার বসতঘর ও বহু ফসলি জমি।
কিছু দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হলেও অনেকেই ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। কুড়িগ্রাম : জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে। প্লাবিত হয়েছে ৪০০টি গ্রাম। প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সিভিল সার্জন অফিস জানায়, ৪ শিশু ও দুই যুবক বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানান, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ধরলা নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ১১৭ সে. মিটার, ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১২১ ও নুনখাওয়ায় ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে তিস্তার পানি কমে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এদিকে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামে ৩টি পৌরসভাসহ ৭৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬০টি ইউনিয়নের ৪০০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ৭৩ হাজার ৫১১টি পরিবারের ৪ লাখ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। বন্যায় ৩০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২টি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ২৩ দশমিক ৩০ কিলোমিটার রাস্তা ও ২২টি ব্রিজ/কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ১ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
ইসলামপুর : সব রেকর্ড ভেঙে যমুনার পানির স্তর বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক পাঠক আবদুল মান্নান এ তথ্য জানান। ২০১৭ সালে বিপদসীমার ১৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে জামালপুরের ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায়। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, বাসভবন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়, কৃষি অফিসারের কার্যালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়সহ সব দাপ্তরিক কার্যালয় এখন পানির নিচে। আঞ্চলিক সড়কগুলোয় পানি ওঠায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রেললাইনে পানি ওঠায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে রেল। ইসলামপুরের ৯০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। দুশতাধিক বসতবাড়ি ভেঙে গেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি।
নওগাঁ : মান্দায় আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীসংলগ্ন বেড়িবাঁধ ভেঙে সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে আত্রাই ও ফকিরনী নদীর উভয় তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৩০টি পয়েন্ট। শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে পাহারা বসানো হয়েছে। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার জানান, বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোয় তদারকি করছেন পাউবোর লোকজন। বাঁধ টিকিয়ে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান তিনি।
গাইবান্ধা : ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গতকাল বিকাল ৩টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানানো হয় ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১৩৫ সে.মি. এবং ঘাঘট নদীর পানি ৯১ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ সময় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গাইবান্ধা শহরের ১ নং, ৭ নং, ৮ নং এবং ৯ নং ওয়ার্ডে পানি ঢোকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওইসব এলাকার বাসিন্দা। কোনো এলাকায় কোমর পর্যন্ত পানি দেখা গেছে। ওই এলাকার নলকূপসহ অন্য পানির উৎস পানিতে ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার ৩২টি ইউনিয়নের ২২৪টি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ২ লাখ ৮৭ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৯ হাজার ২৩০টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই ৪ উপজেলায় জেলা ত্রাণ ভা-ার থেকে ৪০০ মে. টন চাল ও ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা উপদ্রুত এলাকার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা বিতরণ করা হচ্ছে।
নেত্রকোনা : জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, জেলার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা ও পূর্বধলা উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ২১৭টি গ্রামের ১৭ হাজার ৬০০ পরিবার পানিবন্দি। এতে দুর্ভোগে পড়েছে প্রায় ৮৮ হাজার মানুষ। তবে স্থানীয়দের দাবি দুর্ভোগে পড়া মানুষের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। ফুলপুর : ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, আউশ ধান, আমন ধানের বীজতলা, সবজি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে পুকুর ও ফিশারির কয়েক লাখ টাকার মাছ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ৬ হেক্টর জমির আউশ ধান, ৪ হেক্টর জমির শাকসবজি ও ১২ হেক্টর জমির বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
সিলেট : শহরের সবচেয়ে অভিজাত এলাকা উপশহর তিন দিন ধরে পানিবন্দি। টানা বৃষ্টির কারণে উপশহরসহ বেশকিছু এলাকার লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও ঢুকেছে পানি। সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে থাকায় শহরের পানি নামতে পারছে না। নিচু এলাকায় ঢলের পানি প্রবেশ করছে সহজেই। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শাহজালাল উপশহর হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দুদিন ধরে পাঠদান বন্ধ রয়েছে উপশহরের বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুলে। উপশহরের ডি ব্লকের প্রায় ৫০টি বাড়িতে পানি ঢুকে গেছে। এ ছাড়া কাজিরবাজার, শেখঘাট, কাজলশাহ, তালতলা, কালিঘাট, মেন্দিবাগ, উপশহর, কদমতলী, কুশিঘাট, ছড়ারপার, তেরোরতন, চালিবন্দর, সাদারপাড়া, সাদাটিকর, নয়াগাঁও, মাছমপুরের নিচু এলাকাগুলোর মানুষও পানিবন্দি হয়ে আছে। দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সুরমা নদীর তীরবর্তী অনেক স্থানেই বসতবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) : পাহাড়ি ঢলের কারণে চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দি। চিলমারী রক্ষাবাঁধটিও পড়েছে হুমকির মুখে। মানুষজনের মাঝে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। বাঁধে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ২ হাজার পরিবারের মাঝে বাড়ছে আতঙ্ক। বাঁধ ভেঙে গেলে ২ শতাধিক পরিবার ভেসে যাওয়াসহ ৪০ হাজার মানুষ নতুন করে পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১২৫ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত কয়েকদিনে ৩ হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। বন্যার্ত এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গতকাল এবং আজ ১০ রোগী ভর্তি হয়েছেন।
টাঙ্গাইল : রাক্ষসী যমুনা নদীর পানি টাঙ্গাইলে অংশে বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিদিনই ভাঙছে নতুন নতুন জনপদ ও স্থাপনা। শতশত মানুষ নিঃস্ব হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেই কার্যকর কোনো পদক্ষেপ। জেলার ২০টি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬ উপজেলায় তিন লাখ টাকা ও ২০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলের গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, টাঙ্গাইল সদর ও নাগরপুর উপজেলার যমুনা নদীর তীরবর্তী বামপাশের অঞ্চলগুলোয় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মানুষের বাড়িঘর, গ্রামীণ রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ভাঙনের কারণে ভূঞাপুরে চরের ৩টি বিদ্যালয়ে হুমকির মুখে রয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা খানম বলেন, টাঙ্গাইল সদরের ৮টি ও ভূঞাপুর ৯টি বিদ্যালয় বন্যাকবলিত। এর মধ্যে সদরের দুটি, ভূঞাপুরের দুটি বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
এ ছাড়া ১৩টি বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় উপস্থিতি কম হচ্ছে। শিবচর : পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধিতে শিবচরের চরাঞ্চলের ৩টি ইউনিয়নে নতুন করে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। বেশি আক্রান্ত হয়েছে বন্দরখোলা ইউনিয়ন। এরই মাঝে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউনিয়নটির একটি মাদ্রাসা, কালভার্ট, ১৫টি ঘরবাড়িসহ ফসলের মাঠ। ভয়াবহ ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে একই ইউনিয়নের তিন তলাবিশিষ্ট একটি মাধ্যমিক স্কুল, ১টি প্রাথমিক স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন, হাটবাজারসহ ৩ ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ হাজারো বসতবাড়ি। ভাঙন এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত ৪৮ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর শিবচর উপজেলার চরাঞ্চল বন্দরখোলা, চরজানাজাত, কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়ন সংলগ্ন অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্দরখোলার কাজীরসুরা তাহফীজুল কোরআন গোরস্তান মাদ্রাসার একাধিক ঘর অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। মাদ্রাসাটিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ছিল। একই ইউনিয়নসহ সংলগ্ন ৩টি ইউনিয়নের ১৫-২০টি বসতবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। চরজানাজাত ইউনিয়নের একটি কালভার্ট নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়ায় বন্দরখোলার নুরুউদ্দিন মাদবরেরকান্দি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনলা ভবন থেকেও মালামাল সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়। এ ছাড়া একই ইউনিয়নের আরও একটি প্রাথমিক স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন, হাটবাজারসহ ৩ ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ ঝুঁকিতে রয়েছে। বগুড়া : সারিয়াকান্দির যমুনা নদীতে চার দিন ধরে টানা পানি বৃদ্ধিতে নিমজ্জিত হয়েছে সাড়ে পাঁচশর বেশি গ্রাম।
সাড়ে ৮ হাজার হেক্টরের বেশি ফসল মঙ্গলবার পর্যন্ত তলিয়ে গেছে পানির নিচে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আরও অন্তত তিন দিন পানি বৃদ্ধির অব্যাহত থাকতে পারে। তবে বন্যার কবলে পড়া তিন উপজেলার প্রায় ৮০ হাজার মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে বগুড়ার মথুরাপাড়া পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত শনিবার দুপুরে চলতি মৌসুমে বগুড়ায় প্রথম বিপদসীমা অতিক্রম করে যমুনা নদীর পানি।
যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধিতে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার মোট ২৯ ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন। এ ছাড়া পাট, আউশ ধান, মরিচ, আমন বীজতলা ও বিভিন্ন সবজির ৮ হাজার ৬০৩ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এ ছাড়া এবারের বন্যায় সারিয়াকান্দি উপজেলায় বিভিন্ন মৎস্য খামারের প্রায় ২ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। বানভাসীদের জন্য ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ১৪২ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সারিয়াকান্দিতে ১০১ টন, সোনাতলায় সাড়ে ২০ টন ও ধুনটে সাড়ে ২০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।