স্বদেশ ডেস্ক:
মহামারী করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি বিবেচনায় বৃহস্পতিবার থেকে এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে সরকার। বিধিনিষেধের এ সময় জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ছাড়া চলতে পারবে না যন্ত্রচালিত কোনো গাড়ি। এবারের কঠোর এই বিধিনিষেধের আওতায় থাকবে ব্যক্তিগত গাড়িও। সর্বাত্মক লকডাউনের পুরো এক সপ্তাহই এ বিধি কার্যকর থাকবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা: শফিকুল ইসলাম বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
রিকশায় সংক্রমণের ঝুঁকি কম বলে তা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি–প্রধান। তিনি বলেন, মুভমেন্ট পাশের কোনো কার্যকারিতা নেই। এ ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি চলতে পারবে না। শিল্পকারখানার মালিকেরা তাদের গাড়িতে চলতে পারবে না, রিকশায় যেতে হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুলিশ রাস্তায় থাকবে। কোনো যানবাহন বের হলে দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারায় মামলা করা হবে। সংগত কারণ দেখাতে না পারলে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হবে। এর পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতেও সাজা দেয়া হবে। এবার পুলিশ শক্ত অবস্থানে থাকবে। পুলিশ শক্ত অবস্থানে থাকবে বলেই আপনারা নিরাপদে থাকবেন। দণ্ডবিধির ২৬৯ ধারায় মামলায় সাজা ৬ মাসের জেল ও জরিমানা।’
মোহা: শফিকুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘হার্ডলাইনে’ থাকবে। এমনও হতে পারে, প্রথম দিনেই গ্রেফতার পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। সর্বাত্মক লকডাউনে ডিএমপি বিভিন্ন ইউনিটের উপ-কমিশনাররা বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাথে সমন্বয় করে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন।
সর্বাত্মক লকডাউনে শপিং মল, কমিউনিটি সেন্টার, মার্কেট, দোকানপাট-সব বন্ধ থাকবে। কাঁচাবাজারে এর আগে ভিড় দেখা গেছে। অলিগলির সমস্ত দোকানপাট বন্ধ থাকবে। একারণে কাঁচাবাজার রাস্তায় এনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসানো হবে। তবে কাঁচাবাজারে কেউ কোনো যন্ত্রচালিত গাড়িতে যাতায়াত করতে পারবেন না। প্রয়োজনে রিকশা ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানান মোহা: শফিকুল ইসলাম।
গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, তারা পরিচয়পত্র দেখানো সাপেক্ষে যন্ত্রচালিত যানবাহনে চলাচল করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে মাস্ক পরে বের হতে হবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, কোভিড টেস্টের জন্য যেতে হলে মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা দেখিয়ে যেতে পারবেন। ওষুধের দোকানে ব্যবস্থাপত্র দেখিয়ে যেতে পারবেন, তবে যন্ত্রচালিত যানবাহনে নয়। খাবারের হোটেল খোলা থাকবে, তবে খাবার নিয়ে আসা যাবে, হোটেলে বসে খাওয়া যাবে না।
শফিকুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে আসা যাত্রীরা যন্ত্রচালিত গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন পাসপোর্ট দেখিয়ে। তবে আগত ব্যক্তিকে কেউ আনতে গেলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হবে। পুলিশ আচরণে সন্তুষ্ট হলে তাকে ছেড়ে দেবে, না হলে আইনের আওতায় আনবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার, সিটিটিসির অতিরিক্ত কমিশনার মো: আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো: মুনিবুর রহমান ও যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মো: মাহবুব আলম।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে ‘লকডাউন’ শুরু হয়েছে। এ সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অন্যান্য কিছু প্রতিষ্ঠানও সীমিত পরিসরে চালু থাকার কথা বলা হয়েছিল। পুরো সময়ে গণপরিবহন বন্ধ রাখা হলেও চালু ছিল ব্যক্তিগত পরিবহন।