স্বদেশ ডেস্ক: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফরিদপুরের খামারিরা। জেলার ৯ উপজেলায় ছোট-বড় পাঁচ হাজারের অধিক খামারে পশুর পরিচর্যার কাজ চলছে এখন। সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পশু না এলে খামারিরা লাভবান হওয়ার আশা করছেন। এদিকে পশু মোটাতাজা করায় কোনো প্রকার ওষুধ ব্যবহার হচ্ছে না বলে দাবি প্রাণিসম্পদ বিভাগের। জেলার প্রাণিসম্পদ বিভাগের হিসাব মতে, এ বছর জেলার খামারিরা অর্ধলক্ষাধিক পশু প্রস্তুত করছেন আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে। নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে কোরবানির পশু অন্যত্র সরবরাহ করার প্রত্যাশা তাদের।
দেখা যায়, মুন্সিডাঙ্গী, মুন্সি বাজার, বাইতুল আমান এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের প্রিয় পশুর যতœ নিতে হচ্ছে খামারিদের। খাওয়ানো হচ্ছে কাঁচা ঘাষ, খড়, ভুসি, খৈলসহ নানা সামগ্রী। পশুগুলোকে রাখা হয়েছে বিশেষ জায়গা তৈরি করে। ঘরের ভেতরে রয়েছে ফ্যান।
মুন্সিডাঙ্গী এলাকার খামারি মোস্তফা ব্যাপারী জানান, অনেক কষ্ট করে সারাবছর পশুগুলোকে বড় করেছি একটু লাভের আশায়। যদি ভারতীয় গরু না আসে তবে লাভের মুখ দেখবো। খামারিরা পশুকে মোটাতাজাকরণের জন্য কোনো রাসায়নিক দ্রব্য খাওয়াচ্ছে না দাবি করে তিনি জানান, রাসায়নিক দ্রব্য খাওয়ালে গরু তারাতারি স্বাস্থ্যবান হয়, কিন্তু আমরা অসদুপায় অবলম্বন করে লাভবান হতে চাই না। নিজেদের পুঁজি টিকিয়ে রাখতে অবৈধ পথে ভারতীয় গরু প্রবেশ বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ ভারতীয় গরু আনা হলে দেশীয় খামারিরা পশুর ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়।
শুধুমাত্র কোরবানিকে সামনে রেখে ফরিদপুরে গড়ে উঠেছে ছোট ছোট অনেক পশুর খামার। শহরতলীর ধলার মোড়ের খিজির বিশ্বাসের ডাঙ্গীর দাউদ শেখ ২৩ মাস লালনপালন করেছেন কালো মানিককে (নিজের বাড়ির গাভির বাচ্চা)। কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ছাড়া নিজের বাড়ির খড়, ভুসি, লবণ ও ক্ষেতের কাঁচা ঘাস খাইয়ে বড় করেছেন কালো মানিককে। প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৬ কেজি খাবার দিতে হয় তাকে। বিশাল আকৃতির কালো মানিককে দেখতে দাউদের বাড়িতে ভিড় করছে ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। দাউদ শেখের দাবি-২০ মণ মাংস হবে এই কালো মানিকের।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ৫ হাজার ১২০ জন খামারি রয়েছেন। গত বছরের চেয়ে এক হাজার ২০০ খামারি বেশি। এই খামারিরা ৩০ হাজারের অধিক দেশি জাতের গরু পালন করেছেন। অন্যদিকে প্রায় ১৮ হাজার ছাগল ও ভেড়া পালন করা হয়েছে কোরবানি ঈদের জন্য।