স্বদেশ ডেস্ক: সেই সূত্রে শব্দ দুটি একই সূত্রে গাঁথা। সেই মহান নেতার প্রতিচ্ছবি ও মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র প্রদর্শিত হচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ে ‘অদম্য বাংলাদেশ কর্নার’ নামের গ্যালারিতে। একই সঙ্গে প্রদর্শিত হচ্ছে ভাষা আন্দোলনের নানা তথ্যচিত্র। প্রতিদিন তাই এই গ্যালারি দেখতে আসছে সব বয়সের মানুষ। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে নন্দিত হচ্ছে গ্যালারিটি।
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক মনতোষ কুমার দে জানান, খুব ভালো উদ্যোগ। স্কুলশিক্ষক নুরুল হুদা বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ একটা ঘটনামাত্র নয়; এর রয়েছে মহাকাব্যিক ব্যঞ্জনা। এ গ্যালারি পরিদর্শন করে তাই মনে হয়েছে। সাইদা বেগম বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আগমন না ঘটলে সহ¯্র বছরের মতো আমরা হয়তো এখনো স্বাধীনতাবঞ্চিত, অধীন ও পরাজিত কোনো জাতি হিসেবেই থেকে যেতাম। এ গ্যালারিতে এসে বঙ্গবন্ধুকে হারানোর ব্যথায় আরও ব্যথিত হয়েছি। ঠাকুরগাঁও কালেক্টরেট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র হাদিউজ্জামান মুক্তিযুদ্ধের গ্যালারি দেখতে এসে বলল, এ রকম গ্যালারি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ করা উচিত। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান বলেন, দেরিতে হলেও বর্তমান সরকার ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের আগের, ওই সময়ের ও যুদ্ধকালীন ঘটনাপ্রবাহ সঠিকভাবে, সত্যরূপে, স্বচ্ছরূপে নতুন প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত পাকিস্তানি সরকারের ফরমায়েশ জারি করতেই মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলতে চেয়েছিল, কিন্তু তা পারেনি। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অস্তিত্ব দিয়েছে, অখ- ভৌগোলিক অবস্থান দিয়েছে, আত্মপ্রত্যয়ে সুদৃঢ় হওয়ার বোধ দিয়েছে। মাহবুবুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মূল আদর্শগুলো যতদিন আমরা ধরে রাখতে পারব, আমরা জাতি হিসেবে ততই টেকসই ও অন্য দেশের জন্য অনুপ্রেরণা হব। জেলা প্রশাসকের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান তিনি।
মহান মুক্তিযুদ্ধের আগের, ওই সময়ের ও যুদ্ধকালীন ঘটনাপ্রবাহ সঠিকভাবে, সত্যরূপে, স্বচ্ছরূপে নতুন প্রজন্মের কাছে উপস্থাপন করা জাতির জন্য খুব জরুরি দায়িত্ব। সেই উপলব্ধি থেকেই এটি স্থাপন করেন জেলা প্রশাসক কেএম কামরুজ্জামান সেলিম। তিনি ২০১৮ সালের অক্টোবরে ঠাকুরগাঁওয়ে যোগদান করেন। এর পরেই গ্যালারিটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। অল্প সময়ে তৈরি হয় হƒদয়ে আঁকা মুক্তিযুদ্ধের শৈল্পিক গ্যালারিটি। জেলা প্রশাসক ভবনের দ্বিতীয় তলায় এটি স্থাপন করা হয়েছে। সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্যালারিটি পরিদর্শন করেন ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাংসদ আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা রমেশ চন্দ্র সেন। এর পরই এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সরকারি ছুটির দিন ছাড়া খোলা থাকে গ্যালারিটি। প্রতিদিনই দর্শনার্থীদের আগমনে সরগরম হয়ে ওঠে এটি।
জেলা প্রশাসক কেএম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশকে উপস্থাপনের উদ্দেশ্যে এটির তৈরি করা হয়েছে।