স্বদেশ ডেস্ক:
সৌদি আরবে এখন থেকে অবিবাহিত, তালাকপ্রাপ্ত ও বিধবা মহিলারা বাবা বা অন্য কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই পছন্দের বাড়িতে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারবে। দেশটির সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এরকম একটি আইনের অনুমোদন দিয়েছে। বুধবার স্থানীয় গণমাধ্যমে খবরটি প্রথম প্রকাশ হয়েছে।
যুগান্তকারী এই আইনের ফলে সৌদি আরবের নারীরা পুরুষ অভিভাবকের অনুমিত ছাড়াই আলাদা একটি বাড়িতে স্বাধীনভাবে একা বসবাস করতে পারবেন।
সৌদি আরবে দীর্ঘদিন ধরে যে রীতি প্রচলিত আছে, তাতে মহিলারদের অবশ্যই একজন পুরুষ অভিভাবকের অধীনে থাতে হয়। অর্থাৎ দেশটির সব মহিলার একজন পুরুষ অভিভাবক থাকবেন; তিনি হতে পারেন তার স্বামী, ভাই, ছেলে, বাবা অথবা চাচা।
দেশটির বিচারকি কর্তৃপক্ষ শরিয়া আদালতের ১৬৯ ধারার ‘বি’ অনুচ্ছেদ বাতিল করেছে। ওই বিধান অনুসারে অবিবাহিত, তালাকপ্রাপ্ত ও প্রাপ্ত বয়স্ক বিধবা মহিলাদের অবশ্যই একজন পুরুষ অভিভাবকের হেফাজতে থাকতে হতো।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, ‘একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা কোথায় থাকবেন সে ব্যপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার তার রয়েছে। কোনো মহিলা কেবল তখনই অভিভাবকের অধিনে থাকতে বাধ্য হবে যখন তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধে জরীত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।’
আইনটিতে আরো বলা হয়েছে, যদি কোনো মহিলা দণ্ডপ্রাপ্ত হয় তবে সাজার মেয়াদ শেষ হলে কারাগার থেকে তাকে অভিভাবকের হাতে সোপর্দ করা হবে না।
এ বিষয়ে আইনজীবী নায়েফ আল-মানসি গাল্ফ নিউজকে বলেছেন, নতুন এই আইনের ফলে পরিবারগুলো তাদের মেয়েদের বিরুদ্ধে আর মামলা করতে পারবেন না যারা বসবাসের জন্য নিজেদের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েছিল।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সৌদি সরকার ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী মহিলাদের অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই আইডি কার্ডের নাম পরিবর্তনের সুযোগ দিয়ে ছিল।
এরআগে ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে সৌদি আরব মহিলাদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নিয়েছে। পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়াই ২১ বছরের বেশি বয়সীর পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবে এবং ইচ্ছে মতো পছন্দের জায়গায় ভ্রমণের অনুমতি পাবেন।
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে দেশটি ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। যার অংশ হিসেবে মহিলাদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
সূত্র : সিয়াসাত ডেইলি