স্বদেশ ডেস্ক: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শেষ ঠিকানা যাতে পল্লীনিবাসে হয়, রংপুরবাসীর এই দাবির প্রতি জোরালো সমর্থন দিলেন সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদ। গতকাল সোমবার নিজের ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এ কথা বিদিশা।
বিদিশার স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো :
তাই যেন হয়, আমিও তাই চাই। লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের মতো রংপুরের মাটি যেন হয় এরশাদের শেষ ঠিকানা। সহধর্মিনী থাকতে বহুবার পল্লী নিবাসে বারান্দায় ছেলে এরিককে কোলে বসিয়ে উনি আমাকে বলেছিলেন, “তুমি আমার ছোট, দেখ আমার মৃত্যুও যেন আমার ছেলের কাছে থেকে দূরে না রাখে। আমার কবর আমি এই পল্লী নিবাসে চাই। রংপুরের মানুষের ভালোবাসা প্রতিদান আমি দিতে পারিনি আজও। রংপুরের মানুষ আমার কবরে এসে দোয়া করবে, এটাই আমার চাওয়া।”
প্রতিবার এই কথাটি বলতেন তিনি এরিকের দিকে তাকিয়ে, ভেজা চোখে। আজ সদ্য বাবা হারা ছেলে আমার মায়ের আশ্রয়েও নেই। এরিকের চোখের পানিতে পাথরও গলে যায়। কিন্তু গলে না রাজনীতিবিদদের মন। আমার ছেলে এরিককে আটকিয়ে রাজনীতি কোন ফায়দা লুটবেন এনারা?
এর আগে আজ সকালে আরেকটি স্ট্যাটাসে প্রয়াত সাবেক স্বামী এরশাদের কাছে না যেতে পেরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ছেলে এরিককে কাছে না পাওয়ার চরম আকুতির কথা জানান বিদিশা।
এর আগে আজ দুপুরে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডে দলীয় কার্যালয়ে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের জাতীয় পার্টির নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর জাতীয় পার্টির (জাপা) সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাপা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের লাশ রংপুর থেকে ঢাকা নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে ঢাকায় দাফন করতে নিয়ে যাওয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হবে। তার দাফন রংপুরেই হবে।’
আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হেলিকপ্টার যোগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের মরদেহ রংপুরে নেওয়া হবে। সেখানে রংপুর জেলা স্কুল মাঠে/ ঈদগাহ মাঠে বাদ জোহর তার চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এদিন বিকেলেই ঢাকায় এনে সামরিক কবরস্থানে এরশাদকে দাফন করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, জাপা চেয়ারম্যান ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে মারা যান। রক্তে হিমোগ্লোবিনের স্বল্পতা, ফুসফুসে সংক্রমণ ও কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন এরশাদ।