স্বদেশ ডেস্ক:
চট্টগ্রাম বন্দরে সরিষা বীজের আমদানির ঘোষণা দিয়ে আনা আফিম তৈরির উপকরণ পপি বীজের একটি চালান আটক করেছে শুল্ক কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চালানটি আটক করে শতভাগ কায়িক পরীক্ষার উদ্যোগ নিলে এই জালিয়াতি ধরা পড়ে। চালানটির আমদানিকারক কম মূল্য দেখিয়ে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন বলেও সন্দেহ করছেন শুল্ক কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার (এআইআর) রেজাউল করিম নয়াদিগন্তকে জানিয়েছেন, পুরান ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আজমিন ট্রেড সেন্টার সরিষা বীজ ঘোষণায় মালয়েশিয়া হতে দুই কন্টেইনার পণ্য আমদানি করেন। আমদানিকারকের মনোনীত সিএন্ডএফ এজেন্ট হটলাইন কার্গো ইন্টারন্যাশনাল পণ্য চালানটি খালাসের লক্ষ্যে গত ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে বিল অব এন্ট্রি নং- সি- ৬৫১৭৮০ দাখিল করে এবং ঘোষিত পণ্য সরিষা বীজের শুল্ক বাবদ ১ লাখ ৪২ হাজার ৪৯৭.৩৬ টাকা পরিশোধ করে।
শুল্ক-করাদি পরিশোধ শেষে পণ্যচালানটি খালাস গ্রহণের কার্যক্রমও শুরু করে সিএন্ডএফ এজেন্ট। কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খালাস প্রক্রিয়া স্থগিত করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের এআইআর টিম। পরবর্তীতে শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় আমদানিকারকের ঘোষিত ৫৪ টন সরিষা বীজের স্থলে ১২ টন সরিষা বীজ এবং ৪২ টন আমদানি নিষিদ্ধ পপি বীজ (পোস্ত দানা) পাওয়া যায়।
তিনি জানান, একই রকম লেখা ও একই রঙের বস্তায় কন্টেইনারের সামনের অংশে সরিষা বীজ ও পিছনের দিকে পপি বীজ পাওয়া যায়। পণ্যের বর্ণনা সম্পর্কে অধিকতর নিশ্চিত হতে পণ্যের নমুনা ঢাকার গেন্ডারিয়াস্থ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করা হয়। পরীক্ষা শেষে প্রেরিত নমুনাকে পপি বীজ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দেয় সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। এই শুল্ক কর্মকর্তা বলেন, আফিমসহ বিভিন্ন রকমের মাদক তৈরিতে পপি বীজ ব্যবহার করা হয় বলে তা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজার দর অনুযায়ী ৪২ টন পপি বীজের বিক্রয় মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা হলেও সরিষা বীজের মূল্য বাবদ এলসি’র মাধ্যমে ২২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি। পণ্যের অবশিষ্ট মূল্য অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে পরিশোধ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দন্ডনীয় অপরাধ।
অসত্য ঘোষণায় নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করায় সংশ্লিষ্টদের আসামী করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। এছাড়া, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে কাস্টম হাউসের এন্টি মানিলন্ডারিং ইউনিট।