সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৬ অপরাহ্ন

হেফাজতের আহ্বায়ক কমিটি বড় হচ্ছে

হেফাজতের আহ্বায়ক কমিটি বড় হচ্ছে

স্বদেশ ডেস্ক:

সারাদেশে টানা গ্রেপ্তার অভিযানসহ নানামুখী চাপে থাকা হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় গত মাসে। এর পর পরই বিলুপ্ত কমিটির আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এই আহ্বায়ক কমিটির আকার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সংগঠনটি। পাঁচ থেকে সাতজন নেতা যুক্ত করে কমিটি ১০-১২ সদস্যের করা হবে। বর্ধিত এই কমিটিতে শফিপন্থিদের ঠাঁই হচ্ছে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়।

এদিকে ২০১৩ সালের ৫ মের সমাবেশ কেন্দ্র করে দোকানপাট, সরকারি স্থাপনা, পুলিশ ফাঁড়ি, থানা ও গাড়িতে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলার ঘটনায় ৮৩ মামলা হয়। এ ছাড়া গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর কেন্দ্র করে চালানো তা-বে ঢাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ পর্যন্ত ১৫৪টি মামলা হয়েছে। এর বাইরে ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় ১২ মামলা হয়। সব মিলিয়ে ২৪৯টি মামলায় অজ্ঞাতনামা প্রায় পৌনে দুই লাখ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় হেফাজতের শীর্ষস্থানীয় ৩০ নেতাসহ সারাদেশে এক হাজার ২৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নরেন্দ্র মোদির সফরবিরোধী সহিংসতার পর হেফাজতকে ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা আসে সরকারের শীর্ষমহল থেকে। এর পরই ধরপাকড় শুরু হয়। এর মধ্যে ২৫ এপ্রিল হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করে পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এ কমিটির প্রধান উপদেষ্টা হন আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, আহ্বায়ক জুনায়েদ বাবুনগরী ও সদস্য সচিব নুরুল ইসলাম জিহাদী, সদস্য আল্লামা সালাউদ্দিন নানুপুরী ও অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী। তারা সবাই জুনায়েদ বাবুনগরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। পাঁচজনের কেউই কোনো রাজনৈতিক দলের পদে নেই। বর্ধিত কমিটিতে নতুন যুক্ত হতে যাওয়া নেতারাও হবেন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। কমিটি নিয়ে হেফাজত নেতাদের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা যোগাযোগ রাখছে। তবে কবে নাগাদ এই বর্ধিত কমিটি ঘোষণা হবে তা নিশ্চিত করে বলেনি সংশ্লিষ্ট সূত্র।

এ বিষয়ে জুনায়েদ বাবুনগরীর ঘনিষ্ঠ বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিস আমাদের সময়কে বলেন, বর্তমানে মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে। মাদ্রাসা খোলার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত

কমিটি বিলুপ্ত করেও গ্রেপ্তার এড়াতে পারেননি হেফাজতে ইসলামের অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতারা। সবশেষ গত ২১ মে রাজধানীর বারিধারার মাদ্রাসা থেকে মুফতি মনির হোসেন কাসেমীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তিনি বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেছিলেন।

পুলিশ জানায়, সহিংস কর্মকা-ে জড়িত হেফাজত নেতাদের ছাড় না দেওয়ার সরকারের যে কঠোর অবস্থান ছিল সেটি এখনো বজায় রয়েছে। সহিংসতায় জড়িত এক ডজনের বেশি হেফাজত নেতা বর্তমানে পলাতক। তাদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড প্ল্যানিং) হায়দার আলী বলেন, নতুন সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১৫৪টি মামলায় এক হাজার ২৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আগামী মাসে চার্জশিট

এই ধরপাকড় শুরু হলে পুরনো মামলাগুলোর তদন্ত শেষে দ্রুত চার্জশিট দেওয়ার বিষয়ে বক্তব্য দিতে থাকেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ওই মামলাগুলোর তদন্ত করছে ডিবি, সিআইডি ও পিবিআই। দ্রুত এসব মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণের কথা জানিয়েছেন পুলিশের সংশ্লিষ্ট ইউনিটের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা। ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মাহবুব আলম গত সোমবার আমাদের সময়কে বলেন, আগামী মাসে চার্জশিট জমা দিতে পারব বলে আশা করছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877