মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কাল ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু, যা বলছে প্রধান দুই দল ঢাকা মহানগর পুলিশের এক সহকারী কমিশনার বদলি বিএসএফের পোশাকে সীমান্তে মাদকের কারবার করতেন রেন্টু কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে এমভি আবদুল্লাহ ভারতে চতুর্থ দফা লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ ও কাশ্মিরে কেমন ভোট হলো বিভাজন থেকে বেরিয়ে এসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা উচিত : মির্জা ফখরুল মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে কনডেম সেলে রাখা বেআইনি : হাইকোর্ট আমার পুরো ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল : মনোজ মানবদেহে প্রথম ব্রেইনচিপ ইমপ্লান্টে ধাক্কা খেলো নিউরালিংক ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ অধ্যাপক গ্রেপ্তার
ফোনালাপ ফাঁস কতটুকু আইনসম্মত

ফোনালাপ ফাঁস কতটুকু আইনসম্মত

স্বদেশ ডেস্ক:

দেশে হরহামেশাই ব্যক্তিগত ফোনালাপের রেকর্ড ফাঁস হয়ে যাচ্ছে; ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক নানা মাধ্যমে। প্রভাবশালী রাজনীতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তি, সরকারি আমলা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত বা গোপনীয় ফোনালাপও রেকর্ড এবং ফাঁস হচ্ছে। সর্বশেষ, এক নারী সাংবাদিক এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দুই কর্মকর্তার ফোনালাপের রেকর্ড ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। কে বা কারা কোথা থেকে কীভাবে এটি পেয়েছে এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে, সেই উৎস সম্পর্কে গতকাল পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দুই পেশাজীবীর অনেকের মধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া; সৃষ্টি হয়েছে বিব্রতকর এক পরিস্থিতির। এ কাণ্ডে নতুন করে সামনে চলে এসেছে টেলিফোনে আড়িপাতা, ফোনালাপ রেকর্ড এবং তা ফাঁস করে দেওয়ার বিষয়টি। এ বিষয়ে আইন কি বলে, সে নিয়েও চলছে আলোচনা।

বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া তার ব্যক্তিগত ফোনালাপের রেকর্ড করা ও তা ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া দ-নীয় অপরাধ। সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের ‘চিঠিপত্রের ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার’ রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৭১ ধারায় টেলিফোনে আড়িপাতাকে দ-নীয় অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি অপর দুই জন ব্যক্তির টেলিফোন আলাপে ইচ্ছাকৃতভাবে আড়িপাতেন, তা হলে প্রথমোক্ত ব্যক্তির, এই কাজ হবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদ-ে বা অনধিক ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা অর্থদ-ে বা উভয় দ-ে দ-নীয় হবেন।

তবে এখানে শর্ত থাকে যে, ধারা ৯৭ক এর অধীন সরকার হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত গোয়েন্দা সংস্থা, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা, তদন্তকারী সংস্থা বা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত সংস্থার কোন কর্মকর্তার ক্ষেত্রে এই ধারার বিধানাবলি প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ আইনের ৯৭ ক ধারায় রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার জন্য এ কাজের বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এজন্য আইন অনুসারে এসব কাজের জন্য সংস্থাগুলো কর্তৃপক্ষ হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অথবা প্রতিমন্ত্রীর অনুমতি নিতে হবে; যদিও এ আইনে কাদের ফোনে আড়ি পাতা যাবে, কত দিন পর্যন্ত তা করা যাবে- এসবের উল্লেখ নেই। আর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি নিয়ে ফোনকল রেকর্ড করছেন তেমন নজির নেই বললেই চলে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘লফুল ইন্টারসেপশন’ বা আইনসংগত আড়ি পাতার বিষয়টি অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হলেও রাজনৈতিকভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও পেশাজীবী এর অপব্যবহারের শিকার। বিগত কয়েক বছর ধরেই একেকটি ঘটনার প্রেক্ষিতে একের পর এক ব্যক্তিগত ফোনালাপের রেকর্ড ফাঁস হচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যমে। এ নিয়ে ক্ষণে ক্ষণে বিভিন্ন মহল সোচ্চার হলেও ফোনে বিধি বহির্ভূত আড়িপাতা বন্ধ হচ্ছে না। ফোনকল রেকর্ড ফাঁসও বন্ধ হচ্ছে না। আইনে এটি শাস্তিযোগ্য হলেও এ অপরাধে কারও শাস্তি পাওয়ার ঘটনাও বিরল। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপও দৃশ্যমান নয়।

২০০৬ সালের দিকে প্রথম বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয় এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো এভাবে ফোনকল রেকর্ড ও ফাঁসের প্রতিবাদ জানায়। ২০০৬ সালের মে মাসে আড়ি পাতা আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীরের দায়ের করা একটি রিটে হাইকোর্ট রুল জারি করেছিলেন। তিন সপ্তাহের মধ্যে এর উত্তরদানের আদেশে সাড়া দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যাক্ত করেছিলেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ সেই রুলের জবাব দেয়নি।

সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিক প্রয়োজন ছাড়া এবং গ্রাহকের অজান্তে তার ফোনের কল রেকর্ড সংগ্রহ ও কথোপকথন প্রকাশ বন্ধ করার ওপর জোর দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। একটি মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারপতি মো. শওকত হোসেন, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ থেকে এ বিষয়ে অভিমত আসে। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, হরহামেশাই আমরা দেখতে পাচ্ছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অডিও, ভিডিওসহ নাগরিকের ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছড়িয়ে পড়ছে বা প্রকাশ করা হচ্ছে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে চিঠিপত্রসহ নাগরিকের অন্যান্য যোগাযোগের গোপনীয়তা রক্ষার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। আগ্রহী কেউ বা কোনো অংশ চাইলেই তা সহজেই লঙ্ঘন করতে পারে না। রায়ে বিটিআরসি ও দেশের মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোকে তাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দিয়ে আদালত বলেছে, বাংলাদেশ টেলিযোগযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এবং ফোন কোম্পানিগুলোর বৃহত্তর দায়িত্ব হলো যোগাযোগের গোপনীয়তা রক্ষা করে সাংবিধানে সুরক্ষা দেওয়া। তারা তাদের কোনো গ্রাহক বা নাগরিকের যোগাযোগ সম্পর্কিত কোনো তথ্যই সরবরাহ করতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আইন সেটিকে অনুমোদন দেয়। কখনো কখনো মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ কারও কল রেকর্ড সংগ্রহ করতে পারলেও সেক্ষেত্রেও নিয়মের কথা মনে করিয়ে দেয় আদালত।

উচ্চ আদালতের ওই পর্যবেক্ষণের কয়েকদিন পর এ প্রেক্ষাপটে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বক্তব্য গণমাধ্যমে আসে। সেখানে তিনি বলেন, ফোনে আলাপের অডিও কিংবা ভিডিও ফাঁস রোধ করে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা দিতে এই সংক্রান্ত আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোবাইল ফোনে অডিও-ভিডিও রেকর্ড করে তা ফাঁস করার মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে আইনের একটি ধারা সংশোধন করা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ডেটা প্রাইভেসি রক্ষার বিষয়টি নিয়ে একটি ধারা সংযুক্তির মাধ্যমে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই সংশোধনী এখনও আলোর মুখ দেখেনি।

২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট ভারতের সুপ্রিমকোর্ট এক রায়ে জানান, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বা ‘রাইট টু প্রাইভেসি’ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার। শীর্ষ আদালতের নয় সদস্যের বিশেষ সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে এই রায় দেন। ওই রায়ে ‘আড়ি পাতা ব্যক্তির গোপনীয়তায় একটি মারাত্মক আগ্রাসন’ উল্লেখ করে বলেন, ‘যে কোনো মূল্যে অবৈধ আড়ি পাতা এড়াতে হবে। কারো গোপনীয়তায় অনুপ্রবেশ হতে হবে ন্যূনতম।’ আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খেয়াল-খুশিমাফিক আড়ি পাতার অনুমতি দিতে পারবে না বলেও উল্লেখ করা হয় ওই রায়ে।

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, বিটিআরসি কারও ফোনে লফুল ইন্টারসেপশন করতে পারে না। এটা সরকার (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) নির্ধারিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী করে থাকে। একাধিক মোবাইল ফোন অপারেটরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী তারা ভয়েস কল রেকর্ড রাখতে পারে না, শুধু কল ডিটেইল রেকর্ড (সিডিআর) রাখতে পারে। আইন অনুযায়ী জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দিষ্ট করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা এই সিডিআর সংগ্রহ করতে পারে তাদের কাছ থেকে। ওই তালিকার বাইরে কেউ সিডিআর সংগ্রহ করার ক্ষমতা রাখে না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ কল রেকর্ড করার ক্ষমতা রাখে এবং মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী কোন এলাকায় রয়েছে বা তার গতিবিধিও তারা শনাক্ত করতে পারে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা আমাদের সময়কে বলেন, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন এনটিএমসি’র (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন্স মনিটরিং সেল-এর) সহায়তায় কারও ফোন কল রেকর্ড করতে চাওয়ার আবেদন করতে পারে। নির্দিষ্ট কোন নাগরিকের কর্মকা- যদি রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বা হুমকি না হয়, তা হলে আদালতের নির্দেশনা ছাড়া কারও ফোনে কেউ বৈধভাবে আড়ি পাততে পারবে না।

জানতে চাওয়া হলে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বা আইজিপি শহীদুল হক আমাদের সময়কে বলেন, কারও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা (প্রাইভেসি) প্রকাশ করা ঠিক না। এটা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও নিষিদ্ধ। তবে আইন কতজন মানে? সচেতনতা বোধ কতজনের আছে? যার যার স্বার্থে, কাউকে বিপদে ফেলতে, কারও সুনাম ক্ষুণœ করতে এ ধরনের রেকর্ড ফাঁস করে থাকে। কেউ যদি এ ধরনের ঘটনার শিকার হন, তা হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করতে পারেন। আর অভিযোগ এলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এটা তদন্ত করে বের করতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ফোনকল রেকর্ড করতে পারে। আইনে ক্ষমতা দেওয়া আছে। এনটিএমসি’র মাধ্যমে এটা করা হচ্ছে। এখানে সব সংস্থার লোক থাকে। তারা মামলার তদন্তের স্বার্থে কারও অনুমতি ছাড়াই রেকর্ড করতে পারে। আর রাজনৈতিক কারণে করতে হলে সরকারের পূর্বানুমতির প্রয়োজন আছে।

জানতে চাওয়া হলে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া আমাদের সময়কে বলেন, ফোন কলের রেকর্ড কোম্পানিগুলো তাদের সিস্টেম ডেভেলপ করার জন্য ৬ মাস মজুদ রাখে। এছাড়া অ্যানড্রয়েড ফোনে অ্যাপের মাধ্যমে রেকর্ড করা যায়। এর বাইরে ফোনকল নজরদারি (সার্ভিল্যান্স) করা হয়। এই নজরদারির পক্ষে কোন আইন নেই; বরং নজরদারির বিরুদ্ধে আইন আছে। সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদে ব্যক্তিগত যোগাযোগের গোপনীয়তা রক্ষার কথা বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ফোনকল রেকর্ড করে ফাঁস করা অপরাধ। তারপরও এটা গতানুগতিভাবে চলছে। কিন্তু এটা কেউ চ্যালেঞ্জ করছে না। যে কেউ এর শিকার হলে সিভিল ও ক্রিমিনিল মামলা দায়ের করতে পারে। তাছাড়া নাগরিকরা যদি রাষ্ট্রের মালিক হয়, তাহলে সেই নাগরিকদের পাহারাদার হয়ে কেউ তার নজরদারি করতে পারে না। এটা কোন দর্শনের মধ্যে পড়ে না।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877