স্বদেশ ডেক্স: সাধারণ গ্রাহকের জমাকৃত ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও শতকোটি টাকা কানাডায় পাচারের অভিযোগে আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম তাজুল ইসলামের (৬৯) বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেছে সিআইডি। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) শারমিন জাহান এসব কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, বংশাল থানায় দায়ের করা মামলার সিআইডি ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের একটি টিম কর্তৃক মামলার প্রধান আসামি প্রতারক এম তাজুল ইসলামকে গত ১০ জুলাই মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডির সূত্রে জানা যায়, আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের কার্যক্রম ১৯৮৪ সালে শুরু হয়। এম তাজুল ইসলাম ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে ১৯৮৪ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত চাকরিরত ছিল। ২০০৫ সাল থেকে আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের সঙ্গে যুক্ত হয়।
সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেডের কার্যক্রম সমগ্র বাংলাদেশে ২৬টি শাখার অনুমোদন থাকলেও ৮০টি শাখা পরিচালনা করে। এগুলোর মাধ্যমে ১১ হাজার ৪২৫ জন গ্রাহকের নিকট থেকে আনুমানিক তিনশত কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।
সিআইডি জানায়, আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড এর চেয়ারম্যান এম তাজুল ইসলাম কর্তৃক নিয়োগকৃত ৮০টি শাখার ব্যবস্থাপক ও ২য় কর্মকর্তাগণ গ্রাহকদের অধিকহারে মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের নিকট থেকে নগদে আমানত সংগ্রহ করেছিল। জমাকৃত টাকার মেয়াদ পূর্তিতে গ্রাহকের আসল টাকা ও লভ্যাংশ ফেরত চাইতে গেলে আজ দেবে কাল দেবে বলে কালক্ষেপণ ও টালবাহানা করে।
এম তাজুল ইসলাম এবং মো. জাকির হোসেন চৌধুরী শাখার ব্যবস্থাপক ও ২য় কর্মকর্তাগণের মাধ্যমে সংঘবদ্ধভাবে ১২টি বিভিন্ন তফসিলভুক্ত ব্যাংকে ৭৭টি হিসাবের মাধ্যমে আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকা স্থানান্তর করে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়।
ব্যাংকের হিসাব বিবরণী এবং স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে সিআইডি জানায়, আসামিগণ গ্রাহকদের জমাকৃত আনুমানিক ৩০০ কোটি টাকা নগদ ও অনলাইনে ট্রান্সফার করে পরস্পর যোগসাজশে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এম তাজুল ইসলাম বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে স্থানান্তর করতো। তিনি নিজ নামে, স্ত্রী আফরোজা পারভীন এবং ছেলে সাজ্জাদুল ইসলাম তানভীরসহ পরিচালিত অন্য প্রতিষ্ঠানের অন্যান্যদের নামে চেক ইস্যু, ব্যবস্থাপনা কমিটির বর্তমান ও সাবেক সদস্য ও কর্মকর্তাগণের যোগসাজশে নগদে উক্ত টাকা উত্তোলন করতেন।
সংঘবদ্ধ প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে বিভিন্ন ব্যাংকে প্রেরণ; স্থানান্তর ও রুপান্তরের মাধ্যমে হস্তান্তর করে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে সিআইডি।
মানি লন্ডারিং অপরাধ অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এম তাজুল ইসলাম, সাজ্জাদুল ইসলাম তানভীর, মো. জাকির চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে রমনা থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।