স্বদেশ ডেস্ক:
কবি মোহন রায়হানের মা মাহমুদা খাতুন, গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় তার মৃত্যু হয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বোনের মৃত্যুর খবর শুনে একই দিন সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় মাহমুদার ছোট বোন সেলিনা খাতুনের। তারা দুজনই দৈনিক কালের কণ্ঠের সাংবাদিক তৈমুর ফারুক তুষারের খালা।
গত ৩ এপ্রিল মাহমুদা খাতুনের নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে। সংকটজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, অসুস্থতার কারণে তার খাবার খেতে অসুবিধা হচ্ছিল।
তৈমুর ফারুক তুষার বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বড় খালা মাহমুদা খাতুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে স্থানান্তরের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আইসিইউ পাওয়া যায়নি। তার অসুস্থতার খবর শুনে সিরাজগঞ্জের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন ছোট খালা সেলিনা খাতুন। সন্ধ্যার দিকে বড় খালার মৃত্যুর খবর শুনে পথেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে কবি মোহন রায়হান অভিযোগ করেন, ঢামেকের আইসিইউতে কোনো শয্যা পাওয়া যায়নি বলে তার মা মাহমুদা খাতুনকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
গতকাল নিজের দুপুরে ফেসবুক পেজে তিনি লিখেন, ‘আমার মাকে কি আমি বাঁচাতে পারব না? আমার মা মাহমুদা খাতুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে নয়, আছেন পিসিইউতে। তার অক্সিজেনের মাত্রা ৬৫-৭০ এ ওঠা-নামা করছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, এখনই আইসিইউতে না নিলে আমার মাকে বাঁচানো যাবে না। অনেক চেষ্টা করেও তার জন্য আইসিইউর ব্যবস্থা করতে পারিনি। আমার মা ভীষণ কষ্ট পাচ্ছেন, শ্বাস নিতে পারছেন না। আমার জীবনের বিনিময়ে কেউ কি আমার মাকে একটি আইসিইউ বেড দিতে পারেন?’
সিরাজগঞ্জের খোকসাবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন। পাঁচ ছেলে ও তিন কন্যার জননী। বড় ছেলে প্রয়াত মাহমুদ আলম মধু ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে রৌমারী ক্যাম্প কমান্ডার ও স্বর্ণপদকজয়ী জাতীয় ক্রীড়াবিদ।
সিরাজগঞ্জ দিয়ারপাচিল ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে খলিসাকুড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন করা হয়।