সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন

বিচারকদের আতঙ্কে রাখতেই সিনহার বিরুদ্ধে মামলা

বিচারকদের আতঙ্কে রাখতেই সিনহার বিরুদ্ধে মামলা

স্বদেশ ডেস্ক: বিচারকদের আতঙ্কে রেখে স্বাধীনভাবে বিচারকাজ পরিচালনা করতে না দেয়ার উদ্দেশ্যেই সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করা হয়েছে। এটা একটি থ্রেট বা হুমকি, যাতে সরকারের বাইরে বিচার বিভাগ যেতে না পারে এমনটি মনে করেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক দু’জন সভাপতি ও বর্তমান সম্পাদক। তারা সাবেক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে দুদকের এ মামলার তীব্র নিন্দা জানান। সেইসাথে স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্ত করতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বিচারপতি এস কে সিনহা একটি দেশের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তাকে জোর করে দেশ থেকে বের করে দেয়া হয়। সেটা অনেক দিন আগের ঘটনা। এখন তার বিরুদ্ধে যা করা হচ্ছে তা মানুষ বিশ্বাস করছে না। তারা মনে করছে এটা প্রতিহিংসার কারণে করা হচ্ছে।

সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, এটা একটি থ্রেট বা হুমকি, যাতে সরকারের বাইরে বিচার বিভাগ যেতে না পারে। অতীতে একজন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এত দিন তার বিরুদ্ধে কী দুর্নীতি পেল তা প্রকাশ করা হয়নি। এর কিছুই আমরা জানি না।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় সরকারের পক্ষে রাখার জন্য এবং বিচারপতিরা যাতে স্বাধীনভাবে রায় দিতে না পারে তাদের মনে ভীতি সঞ্চার করার জন্যই সরকার প্রভাব খাটিয়ে এ মামলা করেছে। তিনি সাবেক প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে দুদকের এ মামলার তীব্র নিন্দা জানান। সেইসাথে স্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সুষ্ঠু তদন্ত করতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

ব্যারিস্টার খোকন বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী সংক্রান্ত আপিলের রায় নিয়ে মূলত সরকারের সাথে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার দূরত্ব সৃষ্টি হয়। ২০১৭ সালের ১ আগস্ট আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে তার কিছু পর্যবেক্ষণও ভালোভাবে নেয়নি সরকার। সরকারি দল ও জোটের নেতারা সংসদে এস কে সিনহাকে উদ্দেশ করে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেন। পরে রাষ্ট্রযন্ত্র জোরপূর্বক গৃহবন্দী করে তাকে অসুস্থ বলে দেশ ত্যাগে বাধ্য করে।

উল্লেখ্য, ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ (এস কে সিনহা) ১১ জনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই বুধবার দুদক পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন।

বিচারপতি এস কে সিনহা ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) সাবেক এমডি এ কে এম শামীম, সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী, ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: লুৎফুল হক, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মো: শাহজাহান, একই এলাকার নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা, রণজিৎ চন্দ্র সাহা ও তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়।

ফারমার্স ব্যাংকের দু’টি অ্যাকাউন্ট থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতির ‘প্রমাণ’ পাওয়ার কথা গত বছর অক্টোবরে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

২০১৭ সালের অক্টোবরের শুরুতে ছুটিতে যান তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। পরে বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন বলে ওই সময় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877