মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৬:১৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মোজাম্বিকে জঙ্গি হামলায় ‘কয়েক ডজন’ মানুষ নিহত

মোজাম্বিকে জঙ্গি হামলায় ‘কয়েক ডজন’ মানুষ নিহত

স্বদেশ ডেস্ক;

মোজাম্বিকের উত্তরাঞ্চলীয় শহর পালমাতে জঙ্গিদের আক্রমণে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওমর সারাঙ্গার বরাতে আজ সোমবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ওমর সারাঙ্গার বরাতে ওই খবরে আরও বলা হয়, অবরুদ্ধ করে রাখা একটি হোটেল থেকে পালানোর চেষ্টাকালেই ৭ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া শহরটিতে থাকা দেশি-বিদেশি কয়েকশ লোককে উদ্ধারেরও খবর পাওয়া গেছে বলেও বিবিসির খবরে বলা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা উদ্ধারকারী নৌকার অপেক্ষায় সমুদ্রতীরে লুকিয়ে থাকার সময় ছড়ানো ছিটানো একাধিক মাথাবিহীন দেহ দেখেছেন। আতঙ্কিত মানুষ শহরটি থেকে যে কোনো উপায়ে পালানোর চেষ্টা করছে। মেরিন ওয়েবসাইটগুলোতে পালমার আশপাশ এবং দক্ষিণের বন্দরনগরী পেমবায় মালবাহী নৌযান, যাত্রীবাহী জাহাজ, টাগবোট এবং নানান ধরনের নৌকাসহ একঝাঁক নৌযান দেখা গেছে।

এক ঠিকাদার জানিয়েছেন, হোটেল থেকে গাড়িবহরে পালানো অনেকে গত শুক্রবার রাতে সমুদ্রতীরে লুকিয়ে ছিলেন। আর গত শনিবার সকালে নৌকায় করে তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। উদ্ধারের অপেক্ষায় থাকা অন্যদের জন্য নৌযানগুলো স্থানীয় সময় রোববারও যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়া পালমার বাসিন্দা এবং সেখানে যারা কাজ করেন তারাই এই উদ্ধার তৎপরতার সমন্বয় করছেন বলেও জানান এ ঠিকাদার।

মেরিল নক্স নামে এক নারী জানিয়েছেন, তার স্বামী গ্রেগরি ও এক ছেলে পালমা থেকে পালাতে পারলেও অন্য ছেলে আদ্রিয়ান নেল পালানোর চেষ্টাকালে নিহত হয়। মেরিল আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনী তাদের সুরক্ষা দেয়নি; এটা অনেকটা এরকম ছিল, তুমি তোমার জান নিয়ে পালাও। চাইলে এ পরিস্থিতি এড়ানো যেত, তাহলে হয়তো আমার সন্তানও বেঁচে থাকতো।’

উদ্ধার অভিযান সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, পালমা থেকে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষকে নিয়ে একটি নৌকা রোববার স্থানীয় সময় বিকেলে বন্দরনগরী পেমবায় পৌঁছেছে।

মোজাম্বিকের কাবো ডেলগাডো প্রদেশের ৭৫ হাজার বাসিন্দা অধ্যুষিত শহর পালমাতে জঙ্গি হামলায় নিহতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অনেকে এখনও নিখোঁজ। শহরটির পাশাপাশি সমুদ্রতীরগুলোতে মাথাসহ এবং মাথাবিহীন অসংখ্য লাশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন ওই এলাকায় মোজাম্বিক পুলিশের হয়ে কাজ করা নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ডাইক অ্যাডভাইসরি গ্রুপের স্বত্বাধিকারী কর্নেল লিওনেল ডাইক।

এদিকে বিবিসি জানিয়েছে, সশস্ত্র জঙ্গিরা পালমার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে বেশ কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হলেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে ওই দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

পালমার কাছেই ফরাসী জ্বালানি কোম্পানি টোটাল একটি গ্যাস প্রকল্প চালাচ্ছে। কোম্পানিটির শতাধিক কর্মী ও বেসামরিক অনেক মানুষই জঙ্গি হামলার মুখে আমারুলা পালমা হোটেলে আশ্রয় নেন। তাদের অনেকে গত শুক্রবার কাছাকাছি একটি সমুদ্রতীরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি গাড়ির একটি বহরে হোটেলটি থেকে পালানোরও চেষ্টা করে। পরে কয়েকটি হেলিকপ্টারে অন্তত ২০ জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হলেও বাকিরা হোটেলের বাইরে অতর্কিত হামলার মুখে পড়েন।

এর আগে গত বুধবার হামলার শুরুতে জঙ্গিরা দোকানপাট, ব্যাংক ও সামরিক বাহিনীর ব্যারাক লক্ষ্য করে আক্রমণ চালিয়েছিল। দুই পক্ষের সংঘর্ষের শত শত মানুষ কাছাকাছি গ্রাম, জঙ্গল ও ম্যানগ্রোভ বনে পালিয়ে যায়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877